কলকাতা: চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এল। সংশোধনাগারের (Jail) বন্দিরা মুক্তির সময় তাদের বকেয়া পারিশ্রমিকের প্রাপ্য আর্থিক পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একজনকে পাওনা ১২ লাখ টাকার জায়গায় দেওয়া হয়েছে ৭১ হাজার টাকা। ঘটনায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের (Mausumi Bhattacharjee) নির্দেশ, রাজ্যের সংশোধনাগারের সচিবকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অবিলম্বে বকেয়া অর্থ প্রদান করতে হবে। প্রশ্ন উঠছে ওই অর্থ কোথায় যাচ্ছে?
হাবরার অশোকনগরের বাসিন্দা কার্তিক পাল (Kartik Pal)। স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়। পরবর্তীকালে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে সেই সাজা কমে ১০ বছর হয়। পেশায় তিনি ফেরিওয়ালা। স্ত্রী ও তিন পুত্রকে নিয়ে তাঁদের সংসার ছিল। ২০০৬ সালে কার্তিকের স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ঘটনায় অশোকনগর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ কার্তিককে গ্রেফতার করে।
নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন কার্তিকের দুই নাবালক সন্তান অভীক ও সুমিতের সাক্ষীর প্রেক্ষিতে কার্তিককে বারাসত আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।দিনটি ছিল ২০১৩ সালের ২ মার্চ। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন কার্তিক। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৮ সালের ২ জুলাই কার্তিককে ১০ বছরের সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেয়।কলকাতা হাইকোর্টের ১০ বছরের সাজা ঘোষণা হওয়ার পর দেখা যায় কার্তিক ১৫ বছর জেলে আছে। সে দমদমের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পায়। মুক্তির সময় সংশোধনাগারের সুপার পারিশ্রমিকের অর্থ বাবদ কার্তিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৭১ হাজার টাকা জমা করেন।
আরও পড়ুন: Pigeon Feeding: পায়রাকে খাবার দিলেই জরিমানা হবে, কেন এই নির্দেশ জারি হল?
সেই ঘটনায় বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চে আইনজীবী তপন রায় বলেন, ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য প্রতিদিনের পারিশ্রমিক ২৬ থেকে ৮০ টাকা। যেখানে একজন অদক্ষ শ্রমিকের ন্যূনতম প্রাত্যহিক পারিশ্রমিক ১৭৩ টাকা ধরা হয়। সেক্ষেত্রে ৬৫ মাসের কার্তিক পালের প্রাপ্য প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
ঘটনায় মৌসুমী ভট্টাচার্যের নির্দেশ, ৬৫ মাসে কার্তিক পালের পাওনা ১২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯৪৬ টাকা দিতে হবে।রাজ্যের সংশোধনাগারের সচিবকে পশ্চিমবঙ্গ সংশোধনাগার পারিশ্রমিক আইন ১৯৯২ অনুযায়ী প্রকৃত পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করতে হবে। প্রয়োজনে একটি কমিটি তৈরি করে সেই কমিটির মাধ্যমে আইন মাফিক উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।চলতি বছরের ৯ অক্টোবরের মধ্যে আদালতের এই নির্দেশ কার্যকরী করতে হবে।