পুরুলিয়া: নিজের বাল্যবিবাহ (Child Marriage) আটকে রোল মডেল হিসেবে পরিচিত বীণা কালিন্দী (Bina Kalindi)। নিজের কাজের জন্যে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির (President) প্রতিভা পাতিলের হাত থেকে পুরস্কার পেয়েছিলেন বীণা। স্নাতক স্তরের পাঠ শেষ করে এখন ঘোর সংসারি তিনি। এক সন্তানের মা। স্বামী ঝাড়খণ্ডের হোটেলে কাজ করেন। কোনও মতে সংসার চলে তাঁর। সারা বাড়ি জুড়ে চূড়ান্ত দারিদ্রের ছাপ।
এরই মধ্যে বীণা আরও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সরকারের কাছে তাঁর একটাই আর্জি, উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁকে সাহায্য করা হোক। শত অভাব অনটন থাকলেও বীণা উচ্চশিক্ষার খিদে মেটাতে চান, চান নিজের পায়ে দাঁড়াতে, স্বনির্ভর হতে।
আরও পড়ুন: Jail Money: সংশোধনাগারের বন্দিদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিতে হবে
২০১০ সালে প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময় বীণার বয়স ছিল ১২ কি ১৩ বছর। ঠিক সেই সময় বিয়ে ঠিক করেন বাড়ির লোকজন। স্কুলের শিক্ষক এবং শ্রম দফতরের অফিসারের দ্বারস্থ হয়ে ওই বয়সেই নিজের বিয়ে আটকে দিয়েছিলেন বীণা। সে সময় অনেকেই ভবিষতে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আশ্বাস খাতায় কলমেই থেকে গিয়েছে। আজ পর্যন্ত কেউই বীণার পাশে দাঁড়াননি। নিজের সন্তানকে মানুষ করার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষাও চালিয়ে যেতে চান বিয়ে রুখে দেওয়া সেই তরুণী। এর জন্যই তিনি চাকরির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বীণার একটাই প্রশ্ন, তিনি কি উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার মতো কোনও কাজ পাবেন না? আজকের দিনে নারীর মর্যাদা পাওয়ার জন্য অনেকে অনেক কথা বলছেন। সর্বত্র নারী দিবস উপলক্ষ্যে সভা, সমিতি, সেমিনার কত কিছুই না হচ্ছে। বক্তারা নারী স্বাধীনতা, মেয়েদের স্বনির্ভর হওয়া নিয়ে ভাষণের তুফান ছোটাচ্ছেন। কিন্তু তাতে কি বীণার মতো মেয়েদের পড়াশোনার খিদে মিটবে?