কলকাতা: চণ্ডীপুরে (Chandipur) শুভেন্দু অধিকারীর (Shuvendu Adhikari) কনভয়ের গাড়ির ধাক্কায় মৃত যুবককে সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি বেঁচে যেতেন। ওই ঘটনার সিআইডি তদন্তের রিপোর্টে এমন কথাই বলা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ৪ মে ঘটনার দিন বিরোধী দলনেতা গাড়ি থেকে নেমে আহত ব্যক্তিকে দেখেন। তারপর তিনি গাড়ি নিয়ে সোজা কাঁথির দিকে চলে যান। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি তাতে কান দেননি। সিআইডি’র রিপোর্টে ওই ঘটনার জন্য কার্যত শুভেন্দুকেই পরোক্ষভাবে দায়ী করা হয়েছে।
গত ৪ মে বিরোধী দলনেতার কনভয় চণ্ডীপুর থেকে কাঁথির দিকে যাচ্ছিল। কনভয়ের একটি গাড়ি ডান দিকে চেপে যাওয়ার সময় ইসরাফিল খান (৩৩) নামে এক যুবককে ধাক্কা মারে। সিআইডির রিপোর্ট বলছে, অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও কনভয়ের গাড়িগুলি বেপরোয়া ভাবে যাচ্ছিল। তাই মানুষ ভয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ইসরাফিলও সাইকেল নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কনভয়ের একটি গাড়ির বেপরোয়া ধাক্কায় ইসরাফিল রাস্তায় পড়ে যান। তাঁর মাথা এবং শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
চণ্ডীপুর থানা তদন্তে নেমে অভিশপ্ত ওই গাড়ি চালক আনন্দ পাণ্ডেকে গ্রেফতার করেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন কোন কোন সিআরপিএফ জওয়ান শুভেন্দুর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। রিপোর্টে শুভেন্দুর পিএসও-সহ চার’জন অফিসারের নাম দেওয়া হয়েছ। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে সিআরপিএফের ডেপুটি সুপারকে ইমেল করে কিছু বিষয় জানতে চেয়ছে সিআইডি। জানতে চাওয়া হয়েছে,
১. সেদিন কতগুলো গাড়ি নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল
২. কোন কোন চালক গাড়িগুলি চালান
৩. যে গাড়িটি আটক করা হয়েছে, তার মালিক কে?
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের আগের দুর্ঘটনার সম্পর্কেও তথ্য জানতে চাওয়া হয়। ২০২২ সালের ১ জুলাই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরিকে ধাক্কা মেরেছিল শুভেন্দুর কনভয়ের গাড়ি। এছাড়া এক বাস চালককে হেনস্তাও করা হয়েছে। ইসরাফিলের দেহের ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, আঘাতের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ভিআইপির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ইনচার্জের কাছে আরও কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। যেমন,
১. বিরোধী দলনেতা কোথায় যাবেন, সেই রুটের আগাম রিপোর্ট তাঁদের কাছে ছিল কি না।
২. কনভয়ে রাস্তায় নামার আগে গাড়িগুলি কে পরীক্ষা করেন?
৩. আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে না নিয়ে গিতে সিআরপিএফ অফিসারদের কে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে আসতে বলেছিলেন?
৪. কেনই বা তাঁরা আহতকে হাসপাতালে না নিয়ে চলে গেলেন? একই সঙ্গে ভিআইপি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা গাড়িগুলির রেজিস্ট্রেশন নম্বরও জানতে চাওয়া হয়েছে।