কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষকে (Primary Teacher) বেনিয়ম। জোর ধাক্কা রাজ্য সরকারের। প্রশিক্ষণহীন ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) । শুক্রবার আদালত জানিয়েছে, তাঁদের চাকরির মেয়াদ আর চার মাস। চার মাসের পর ছাড়তে হবে চাকরি। এই চার মাস পার্শ্বশিক্ষকদের (Para Teacher) সমতুল বেতন পাবেন তাঁরা। তিন মাসের মধ্যে ৩৬ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) এদিন এই নির্দেশ দেন। এমনটাই আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ছাড়াই, সংরক্ষণ নীতির নিয়ম না মেনে চাকরি হয়েছিল। রাজ্য সরকার চাইলে মানিক ভট্টাচার্যের সম্পত্তি থেকে টাকা কেটে নতুন নিয়োগের খরচ বহন করা যাবে। ২০১৪ সালে টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়। সেসময় নিযুক্ত ৪২ হাজার ৫০০ জন শিক্ষকের মধ্যে এদিন ৩৬ হাজারের চাকরি বাতিলের নির্দেশ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কার্যত নজিরবিহীন নির্দেশ। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারবেন ২০১৪ টেটে ১ লক্ষ ২৫ হাজার চাকরি প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন: Recruitment Cancel | অপ্রশিক্ষিত ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
বিচারপতি এদিন তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, আগামী চার মাস ওই ৩৬ হাজার শিক্ষক স্কুলে যেতে পারবেন। তবে বেতন পাবেন পার্শ্ব শিক্ষক হিসেবে। রাজ্যকে তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন। নিয়োগ না পেয়ে হাইকোর্টে ১৪০ জন মামলা করেছিলেন। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে নম্বর বিভাজন সহ তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তালিকায় দেখা গিয়েছে, তাঁদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন।
এই বিষয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, অকারণে জেদাজেদি করতে গিয়ে যেন কেউ বলি না হয়ে যায়। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, টাকার বিনিময়ে এখানে খেলা হয়েছে। ৩ কে ৩৩ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণহীনদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। ওয়েবসাইটে স্বচ্ছতার সঙ্গে তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, যেভাবে ইচ্ছামতো নিয়োগ করা হয়েছে, টাকার লেনদেন হয়েছে তা খুব লজ্জার বিষয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, এটাকে দুর্নীতির ভূমিকম্প বলা যেতে পারে। জানি না এর শেষ কোথায়।