কলকাতা: কর্মবিরতিতে শামিল হওয়ায় ডোমজুড়ের এক শিক্ষককে বদলির (Teacher Transfer) নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ (District Primary Council)। বদলির নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে (High Court) যান ওই শিক্ষক। সোমবার সংসদের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) বলেন, কর্মবিরতিতে শামিল হলে কর্মজীবনে ছেদ পড়বে এই বিজ্ঞপ্তি কী করে দেয় রাজ্য? কোন আইনের বলে এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে? রাজ্য সরকারের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, মহার্ঘ ভাতা দিয়ে দিন না। তাহলেই তো আর ঝামেলা হয় না।
আদালত সূত্রের খবর, ডিএর দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ যে আন্দোলন শুরু করেছে ডোমজুড়ের মহিষনালা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অমিত ঘোষ তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১০ মার্চ মঞ্চের ডাকা কর্মবিরতিতেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এরপরই হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ তাঁকে প্রথমে শোকজ করে। পরে বদলি করা হয় অমিতকে। তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। অমিতের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, ১০ মার্চ বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে কর্মবিরতিতে অংশগ্রহণ করায় তাঁর মক্কেলকে শোকজ করা হয়েছিল ১৪ এপ্রিল। ২৫ এপ্রিল তাঁকে বদলির নোটিস ধরানো হয়। আইনজীবীর অভিযোগ, প্রতিহিংসামূলক মনোভাবের কারণেই এই বদলি। বিচারপতির মতে, শোকজ এবং বদলির নোটিস পরস্পরের পরিপূরক। এরপরই তিনি বদলির নোটিসের উপর স্থগিতাদেশ দেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৬ জুন।
আরও পড়ুন: CBI | Calcutta High Court | কুন্তলের চিঠির মামলায় আদালতের তোপে সিবিআই
ডিএর দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন এখনও চলছে। ঘটনাচক্রে এদিনই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে ডিএ আন্দোলনকারীদের কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। তাও তো আমরা ১৩৫ শতাংশ ডিএ দিয়েছি। বাম জমানায় ডিএ দেওয়া হত না। অফিস কামাই করে আন্দোলন করলে সার্ভিস রুল ব্রেক করা হয় না? মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ডিএ দিতে পারব না। ডিএ দেওয়ার মতো টাকা নেই। আমাদের ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। সেই টাকা আনার ব্যবস্থা করুন। ডিএ দিয়ে দেব। মুখ্যমন্ত্রী এই ইস্যুতে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপিকে এক বন্ধনীতে ফেলে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, যাঁরা ডিএ আন্দোলন করছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করতে চলে যান। তাহলেই সমস্যা মিটে যাবে। গত শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এদিনই তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন, হতাশ হবেন না। সরকার আপনাদের পাশে আছে।