কলকাতা: রাজ্যপাল তথা আচার্যের কার্যকলাপের জন্যই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন সদ্য প্রাক্তন একদল উপাচার্য। শুক্রবার কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে ওই প্রাক্তন উপাচার্যরা এই অচলাবস্থা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee Chief Minister of West Bengal) হস্তক্ষেপ দাবি করেন। তাঁরা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (C. V. Ananda Bose Governor of West Bengal) কড়া সমালোচনা করে বলেন, আমরা তাঁর কার্যকলাপকে সমর্থন করছি না। রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে তিনি যেন মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে সহযোগিতা করেন।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল রাজ্যের ১১টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য (Vice Chancellor) নিয়োগ করেন। তাঁদের নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর অভিযোগ, রাজ্যপাল বেআইনিভাবে এই উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে। যাঁদের উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের ওই নিয়োগপত্র প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ করেন। তাঁর অনুরোধ মেনে এক-দুজন নিয়োগপত্র প্রত্যাখ্যান করেন।
ওমপ্রকাশ মিশ্র, আশুতোষ ঘোষ, দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জন চক্রবর্তী প্রমুখ প্রাক্তন উপাচার্য এদিন সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, স্ট্যাটিউট, অর্ডিন্যান্স উপেক্ষা করে, সার্চ কমিটির জন্য অপেক্ষা না করে রাজ্যপাল একতরফা উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন। তাঁরা বলেন, এতে উপাচার্যরা অপমানিত হয়েছেন। তাঁদের হেনস্তা করা হয়েছে। রাজ্যপালের কার্যকলাপে আমরা বিরক্ত। তাঁর এই কাজকে আমরা সমর্থন করছি না।
আরও পড়ুন: Bangla Bandh | Kurmi Protest | কুড়মিদের দাবির বিরুদ্ধে ৮ জুন বাংলা বনধের ডাক আদিবাসীদের
ওই প্রাক্তন উপাচার্যরা বলেন, রাজভবন থেকে উপাচার্যদের সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠাতে বলা হচ্ছে। এর আগে রাজ্যে কখনও উপাচার্যদের সঙ্গে রাজ্যপাল তথা আচার্য এ ধরনের ব্যবহার করেননি। সব মিলিয়ে এক নজিরবিহীন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি এবং গতিময় নেতৃত্বের জন্য গত ১১ বছরে রাজ্যে বহু নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার যখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গাইডলাইন মেনে কাজ করছে, তখন রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতি উচ্চশিক্ষায় এক অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে। রাজ্যপালের এই পদক্ষেপে তাঁরা যে ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত, প্রাক্তন উপাচার্যরা তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন।