কলকাতা: প্রাথমিক টেটে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই আদালতের নির্দেশ মেনে সিটের তদন্তকারীদের নাম জমা দিল শুক্রবার। তবে সিবিআইয়ের ওই সিটের মাথায় কে থাকবে, তা নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন চলে আদালতে। আগের দিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তার নেতৃত্বে সিট গঠন করতে হবে। কিন্তু এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, যুগ্ম অধিকর্তাকে অন্য অনেক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই তাঁর নেতৃত্বে সিট গঠন করা সম্ভব নয়।
আদালত প্রশ্ন তোলে, কেন যুগ্ম অধিকর্তাকে সিটের মাথায় রাখা যাবে না। এরপর বিচারপতি হুঁশিয়ারি দেন, তাহলে তিনি সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাসকেই সিটের মাথায় বসিয়ে দেবেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, যুগ্ম অধিকর্তা সিটের তদন্তের দেখভাল বা নজরদারি করতে পারেন। কিন্তু তাঁর পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া অসম্ভব। পরে অবশ্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, দিল্লি থেকে সদ্য আসা যুগ্ম অধিকর্তা এন বেণুগোপালের নজরদারিতেই সিটের তদন্ত হবে। সিটের বাকি সদস্যরা হলেন ধরমবীর সিংহ (এসপি), সত্যেন্দ্র সিংহ (ডিএসপি), কেসি ঋষিনামূল (ডিএসপি), সোমনাথ বিশ্বাস (ইন্সপেক্টর), মলয় দাস (ইন্সপেক্টর) এবং ইমরান আশিক (ইন্সপেক্টর)। মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য
ঋষিনামূলকে নিয়ে আপত্তি তোলেন। সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, এ ব্যাপারে তাঁকে অফিসারদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
আগেরদিন টেট মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছিল প্রশ্নপত্রে ভুল থাকার জন্য উত্তরপত্রে নম্বর বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে ২০ হাজার ৭৮৭ জন আবেদন করেছিলেন। ওই বিষয়েও হাইকোর্টে মামলা হয়। হাইকোর্ট ভুল নম্বরের জন্য এক নম্বর করে সকলকে দিতে বলেছিল। কিন্তু অবিযোগ, পর্ষদ নম্বর বৃদ্ধি করে ২৭৩ জনকে উত্তীর্ণ বলে ঘোষণা করে। তাঁদের নিয়োগও করা হয়। আদালত এই নিয়োগ বাতিল বলে জানিয়ে দেয়। পর্ষদ আরও বলেছিল, উত্তরপত্র মেলানোর জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল তাঁরা।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ২১ জুলাইয়ের জন্য চাঁদা তুললেই বহিষ্কার, কড়া হুঁশিয়ারি অভিষেকের
এদিন আদালতের নির্দেশ, যে ২০ হাজার ৭৮৭ জন প্রার্থী নম্বর বৃদ্ধির আবেদন করেছিলেন, তার মূল কপি সোমবার বেলা ৩টের মধ্যে জমা দিতে হবে। যে নোটের প্রেক্ষিতে ওই ২৭৩ জনকে পাশ করানো হয়েছিল, সেই নথিও জমা দিতে হবে আদালতে। পর্ষদের যে প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছিল, জমা দিতে হবে সেই প্রস্তাবও। জানাতে হবে বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের নাম। শুধু তাই নয় বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের মূল কপিও সোমবার আদালতে পেশ করতে হবে পর্ষদকে। একইসঙ্গে ওই রিপোর্ট রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কোন অফিসার অনুমোদন করেছিলেন, দাখিল করতে হবে তাঁর প্রমাণপত্রও। মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ জুন।