কলকাতা: দলে আরও কোণঠাসা কুণাল ঘোষ। বুধবার তৃণমূলের রাজ্য সাধাকণ সম্পাদকের পদ হারান কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও বাদ গেল তাঁর নাম। এদিন দলের তরফে বাকি দফাগুলির ভোট প্রচারের জন্য যে তারকা প্রচারক হিসেব ৪০ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কুণাল ব্রাত্য। বুধবারও তিনি তারকা প্রচারকের তালিকায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি পদে নেই, পথে আছি। যে সাধারণ কর্মীরা রাস্তায় নেমে তৃণমূলের পোস্টার লেখেন, দলের হয়ে স্লোগান দেন, তাঁরা আমার সঙ্গে আছেন।
যে পত্রিকায় কুণাল কাজ করেন, ধর্মতলায় সেই অফিসের সামনে বিভিন্ন জেলা থেকে বহু তৃণমূল কর্মী আসেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। অফিস থেকে বেরিয়ে তিনি তাঁদের কাছে এসে বলেন, এরাই আমার সম্পদ। আমি তৃণমূলের সাধারণ কর্মী ছিলাম, আছি, থাকব। প্রসঙ্গত, গতকাল রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ খোয়ানোর পর কুণাল বলেছিলেন, তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকার চেষ্টা করে যাব। এদিন তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) হয়ত আমার পারফরম্যান্সে খুশি নন। কর্মীদের দেখে তিনি আবেগে কেঁদে ফেলে বলেন, গতকাল সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আজ হোক, কাল হোক, মমতা, অভিষেক দলের প্রতি আমার আনুগত্য অনুধাবন করতে পারবেন। কাকে পদে রাখবেন কী রাখবেন না, তা ঠিক করেন ওই দুজনই। পদ দিয়ে আমার কী হবে।
আরও পড়ুন: বিচারপ্রক্রিয়ার অনুমতিতে ফের সময় চাইল রাজ্য, ক্ষুব্ধ আদালত
বৃহস্পতিবার কুণাল বলেন, শুধু আমার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবু আমার কোনও আফশোস নেই তাঁর। রোদে ঘোরার হাত থেকে বেঁচে গেলাম। তিনি এদিনও নিশানা করেন দেব (Dev) এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Sudip Banerjee)।পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর কাজেরও প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখে। দুদিন আগে পর্যন্ত তিনি শুভেন্দুকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতে ছাড়েননি। কুণাল বলেন, শুভেন্দু সারা রাজ্যে ঘুরে পারফর্ম করে চলেছেন। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন অন্য কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। শুভেন্দুর থেকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেখা উচিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে গদ্দার বলেছেন। দেব বলছেন, গদ্দার শব্দটি পছন্দ করেন না। এই কথাতে পরিষ্কা, দেব সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করছেন। তাপস রায়ের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল বলে আমি পাপী হয়ে গেলাম?
এদিন কুণালের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের এক মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেন, কুণালের অবদান দলের ভোলা উচিত নয়। দল যখনই বিপদে পড়েছে, বিরোধীদের আক্রমণের শিকার হয়েছে, আমি আর কুণাল মিলে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছি দলেরই স্বার্থে। একটি অরাজনৈতিক মঞ্চে কুণালের সঙ্গে বিজেপি নেতা তাপস রায়ের দেখা হয়েছে। তিনি কি কথা বলবেন না। এটাই তো তৃণমূলের সৌজন্যের রাজনীতি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, দেরিতে হলেও কুণাল সত্যি কথা বলার সাহস দেখাতে পেরেছেন।
অন্য খবর দেখুন