কলকাতা : গড়িয়াহাট মোড় থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একডালিয়া রোড । সাবেক ওই রোডের একটি নতুন নাম করেছে পুরসভা । পি সি সরকার সরণি । পার্ক সার্কাস থেকে গড়িয়াহাটগামী মূল রাস্তা থেকে বাঁ দিকে একডালিয়া রোড । এভারগ্রিনের জাঁকজমকপূর্ণ দুর্গাপুজো শহরের বড় পুজোগুলির অন্যতম । দীপাবলির রাত থেকে যেন অভিভাবকহীন হয়ে গেল দক্ষিণ কলকাতার এই ক্লাব ।
তখন জোরকদমে চলছিল কালীপুজোর আয়োজন । আচমকা এসেছিল দুঃসংবাদ । খবরটা মুহূর্তে ম্লান করে দিল কালীপুজোর আনন্দ । প্রায় কুড়ি ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, ‘দাদা’ আর নেই, তা যেন মেনেই নিতে পারছেন না একডালিয়া এভারগ্রিনের কর্মকর্তারা ।
কলকাতার একাধিক পুজো যখন থিমের দিকে ঝুঁকেছে, তখন একডালিয়া এভারগ্রিন ভরসা রেখেছিল সাবেকিয়ানায়। শোনা যায়, সেটাও সুব্রতর ইচ্ছায়। সাবেকি একডালিয়া কিন্তু ভিড়ে কলকাতার অন্যপুজোকে টেক্কা দিয়েছে এ বছরও । এক মাস আগে দুর্গাপুজোর যাবতীয় দায়িত্ব সামলেছেন । প্রতিমা থেকে মণ্ডপ, পুরোটাই নখদর্পণে ছিল ৭৫-এর তরুণ সুব্রতর । সেই ‘দাদা’ আর নেই, তা মেনে নিতে পারছেন না কেউ ।
আরও পড়ুন: ‘সুব্রতদার দেহ আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়’, মন্ত্রীর শেষ যাত্রায় থাকবেন না মমতা
প্রতিদিন বাড়ি ফেরার পথে একটিবারের জন্য হলেও ক্লাবে যেতেন। মন্ত্রী সুব্রত একেবারে অন্য মেজাজে ধরা দিতেন ক্লাবের অন্দরে। ঠাট্টা-ইয়ার্কি চলত অনবরত। ছোটদের সঙ্গেও সময় কাটাতেন । আট থেকে আশি, সকলের সঙ্গে সমান স্বচ্ছন্দ ছিলেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত মন্ত্রী ।
এই ক্লাব তৈরি নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি । কিন্তু, ব্যক্তি সুব্রত বা একডালিয়া– জনপ্রিয়তায় একটি বারের জন্য কেউ দাগ দিতে পারেননি । বৃহস্পতিবার রাত থেকে শোকে বিহ্বল গোটা এলাকা । সবার মুখে একটাই কথা, ‘দাদা’ নেই…
বিভিন্ন ছবি জানান দিচ্ছে, ক্লাবের সঙ্গে কতটা একাত্ম ছিলেন সুব্রত । যে চেয়ারে বসে তিনি কাজ করতেন, সেই চেয়ার আজ ফাঁকা । ছবিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ক্লাবের সদস্যরা । স্মৃতিচারণে উঠে আসছে নানা ঘটনার কথা। সকলেই সেই মুহূর্তের অপেক্ষায়, কখন দাদা শেষ বারের জন্য আসবেন ক্লাবে ।
আরও পড়ুন: কেমন ছিলেন ব্যক্তি সুব্রত? স্মৃতিচারণায় শাসক থেকে বিরোধীরা
সাদা রঙ বরাবারের জন্য প্রিয় ছিল মানুষটার । দাদাকে শেষ বারের জন্য আনা হচ্ছে, তাই তৈরি করা হয় অস্থায়ী বেদী, সাদা কাপড়ে মোড়া ।
দাদা এলেন…
দুই পায়ে নয়, চার কাঁধে…