কলকাতা: ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি সবকা সাথ সবকা বিকাশের স্লোগান তুলেছিলেন। এই স্লোগান দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সব শ্রেণি, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের বিকাশ ও উন্নয়নই হবে তাঁর প্রধান লক্ষ্য। পরবর্তীকালে এই স্লোগান বিজেপির মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সভা-সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী তো বটেই, বিজেপির অন্য নেতা-মন্ত্রীদের মুখে মুখে ফিরত সবকা সাথ সবকা বিকাশের স্লোগান। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রিয় স্লোগানকেই বদলে দেওয়ার ডাক দিয়ে বিজেপির অন্দরে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার দলের বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকে তিনি বলেন, সবকা সাথ সবকা বিকাশের স্লোগান বন্ধ করুন। আমিও বলতাম। আর বলব না। শুভেন্দুর এই বক্তব্য নিয়ে রীতিমতো হইচই শুরু হয়েছে দলের মধ্যে। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য বলেছেন, এই বক্তব্য দল সমর্থন করে না। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, এটা বিরোধী নেতার ব্যক্তিগত মত।
ভাষণ শেষ হতেই শুভেন্দু বুঝতে পারেন, তিনি ভুল বল খেলে ফেলেছেন। বৈঠক চলাকালীনই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিরোধী নেতা তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা বলার চেষ্টা করেছি। আমার অভিজ্ঞতা, যন্ত্রণা থেকে এ কথা বলেছি। এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীজির স্লোগানকে মিশিয়ে ফেলবেন না। পরে তিনি এক্স হ্যান্ডেলেও লেখেন, আমার বক্তব্যকে ভুল প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু-সুকান্ত বিভাজন স্পষ্ট দলীয় বৈঠকে
এদিন বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, দলীয় সংগঠনে সংখ্যালঘু মোর্চা রাখারও কোনও দরকার নেই। এটাও তাঁর ভুল ব্যাট চালানোর মতো হয়ে গিয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে এ ব্যাপারে কিছু না লিখলেও শুভেন্দু পরে বলেন, আমি বাংলার প্রেক্ষপটে সংখ্যালঘু মোর্চা না রাখার কথা বলেছি। তাঁর ব্যাখ্যা, লোকসভা ভোটে বিজেপি ৯১ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট পায়নি। সদ্যসমাপ্ত উপনির্বাচনে ৯৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট তারা পায়নি। শুভেন্দু অনুগামীরা বলেন, এর জন্যই বিরোধী নেতা বলেছেন, আমাদের সংখ্যালঘু ভোটও দরকার নেই।
এই আবহেই বুধবার কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির থেকেও চড়া সুরে হিন্দুত্বের তাস খেলেছেন। তিনি বারবার হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে বাংলায় বাঁচতে হলে হিন্দুদের জেগে ওঠার ডাক দিয়েছেন।