কলকাতা: ১০ বছর আগে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন করার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। দিল্লির নির্ভয়া-কাণ্ডের ছয় মাস পরই একই ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল বারাসত লাগোয়া কামদুনি। ওই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল আলোড়ন পড়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অকুস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিক্ষোভকারীদের তিনি সিপিএম আর মাওবাদীদের লোক বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। শুক্রবার বেলা ২টোয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে ওই মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা।
২০১৩ সালের ৭ জুন বারাসতের কামদুনিতে ওই কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনায় নিম্ন আদালত তিন অভিযুক্তর ফাঁসি এবং আরও তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল। অভিযুক্তদের তরফে সেই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যাওয়া হয়। মামলা শেষ না হওয়ায় সেই শাস্তি কার্যকর হয়নি।
আরও পড়ুন: ধরনা চলবে রাজ্যপাল দেখা না করা পর্যন্ত, ঘোষণা অভিষেকের
২০১৬ সালে কামদুনি মামলায় রায় ঘোষণা করে কলকাতা নগর দায়রা আদালত। এই ঘটনায় মোট অভিযুক্ত ছিল ন’জন। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন গোপাল নস্কর নামে এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। অন্য দুই অভিযুক্ত রফিক গাজি ও নুর আলি বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। বাকি ছ’জন সইফুল আলি মোল্লা, আনসার আলি মোল্লা, আমিন আলি, ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাদের মধ্যে আনসার, সইফুল ও আমিনের ফাঁসির নির্দেশ হয়। ইমানুল, ভোলানাথ এবং আমিনুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
হাইকোর্টে দোষীদের সাজা মুকুব করার জন্য আবেদন জানান সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবিরা। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলে প্রায় পাঁচ মাস ধরে। নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে প্রথম দিন থেকেই দুই আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় এবং আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায় লড়াই করে চলেছেন।
ওই মামলা চলাকালীন মোট ১৪ জন সরকারি আইনজীবী বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হন। সেই সময় প্রথম সারির সরকারি আইনজীবীরা এই মামলায় দাঁড়াতে চাননি। অনেক সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে অভিযুক্ত পক্ষ সরাসরি যোগাযোগ করে বলেও অভিযোগ উঠেছে।