কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) এবার নাম জড়াল আরও এক পার্থর। ইনি পার্থ সরকা (Partha sarkar)। সিবিআই দাবি করেছে, মন্ত্রী থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) কাছে দুর্নীতির টাকা পৌঁছে দিতেন এই পার্থ সরকার। জেরায় কুন্তল ঘোষও (Kuntal Ghosh) জানিয়েছেন, দুর্নীতির কালো টাকা প্রথমে সংগ্রহ করতেন পার্থ সরকার। পরে তা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত। এদিকে সংবাদমাধ্যমের কাছে পার্থ সরকার দাবি করেছেন, তিনি কুন্তল ঘোষকে চেনেন না। তিনি বলেন, যে আমার নাম বলেছেন তাঁকে আমি জীবনে দেখিনি, চিনিও না। ২০০ শতাংশ দায়িত্ব নিয়ে বলছি উনি বেহালায় একদিনও আসেননি। এই কেসের পর তাঁর নাম শুনেছি।
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ। তাঁকে জেরা করছে ইডি আধিকারিকরা। কয়েকদিন আগেই পিএমএলএ বিশেষ আদালতে কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে ইডি। সেই চার্জশিটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের তৎকালীন পিএ সুকান্ত আচার্যের নাম। এদিকে পার্থ যখন পরিষদীয় মন্ত্রী ছিলেন, তখন সেই দফতরের ওএসডি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও রয়েছে এই চার্জশিটে। ইডির দাবি, এই সকলেই নিয়োগ দুর্নীতির ইন্টারভিউ আয়োজনে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে বুধবার আচমকাই জেলবন্দি প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতে ডেকে পাঠান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রায় দশ মিনিট এজলাসে বিচারপতি একান্তে কথা বলেন মানিকের সঙ্গে। বিচারপতি তাঁর কাছে জানতে চান, ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সিলেকশন কমিটি তৈরি হয়েছিল কি না। মানিক জানান, কমিটি তৈরি করা হয়েছিল।
বিচারপতি: ২০২৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেমন করে হয়েছিল।
মানিক: এই প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। যেমন, টেটের ফল প্রকাশ, ইন্টারভিউ, অ্যাপটিটিউড টেস্ট ইত্যাদি।
বিচারপতি: বাইরের কোনও সংস্থাকে কি ফল প্রস্তুত করার জন্য ডাকা হয়েছিল।
মানিক: হ্যাঁ একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে এখন তার নাম মনে পড়ছে না।
বিচারপতি: এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নামে কোনও সংস্থার নাম শুনেছেন?
মানিক: হ্যাঁ নাম শুনেছি। কিন্তু ঠিক নিশ্চিত নই।
বিচারপতি: আপনার সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তা কি ঠিক।
মানিক: অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়েছিল। তখন কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।
বিচারপতি: ওই প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ নীতি মানা হয়েছিল?
মানিক: যতদূর মনে পড়ছে আইন অনুযায়ী সব হয়েছিল।
এরপর মানিক হাত জোড় করে বলেন, যাওয়ার পথে একটা অনুরোধ করছি। এই সংক্রান্ত যে কোনও মামলায় আমাকে যখন খুশি ডেকে পাঠাবেন। ১৫ মিনিট আগে ডাকলেই আমি চলে আসব। পরে আমার বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ করবেন মেনে নেব। বিচারপতি বলেন, সত্যটা সামনে আসা দরকার। পাল্টা মানিককে বলতে শোনা যায়, আমি সত্যিটাই বলতে চাই। সত্য সামনে আসুক। সত্য সুন্দর। বিচারপতি বলেন, দশ চক্রে ভগবান ভুত। এই মানিক ভট্টাচার্য আমাদের ডেপুটি শেরিফের শিক্ষক ছিলেন।