নয়াদিল্লি: গাজিয়াবাদ কোর্ট (Court) চত্বরে কয়েক শো মানুষ হাজির। বুধবার তখন ঘড়ির কাঁটায় বিকাল ৪টে। হুড়মুড়িয়ে দোতলার উপরে বড় চেহারার চিতা (Leopard) ঝাঁপিয়ে পড়ল। বাবাগো-মাগো ডেকে সবাই তখন কোথায় নিজেকে লুকোবে তাই নিয়ে ব্যস্ত। বিচার প্রার্থী, আইনজীবী, সাক্ষী, মক্কেল সবাই তখন নিজেকে বাঁচাতে সুরক্ষিত জায়গা খুঁজছেন। সবাই যখন পালায় পালায় করছেন সেসময় সেখানে জুতো সেলাইয়ের ‘দামী’ সরঞ্জাম ছেড়ে পালাতে সাহস পাননি মুচি (Cobbler)। দূর থেকে বাঘটিকে তাড়াবার চেষ্টা করতেই তাকে প্রথমে আক্রমণ করে চিতাটি। তা দেখে এক পুলিশ কর্মী কর্তব্যের খাতিরে এগিয়ে গেলে তাকেও আক্রমণ করে। একটি লাঠি খুঁজে পেয়ে এক আইনজীবী তা দিয়ে তাড়াতে গেলে তাকেও আক্রমণ করে চিতাটি। ততক্ষণে এসে গিয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা। পুলিশের বিশাল টিম। কোনওভাবে বাঘটিকে কর্নার করে বন দফতরের কর্মীরা ঘুম পাড়ানি গুলি দিয়ে কাবু করে তাকে। ততক্ষণে ৪ ঘণ্টা পার। ওই সময়ে ১২-১৪ জনকে আক্রমণ করেছে বাঘটি। অ্যাম্বুলেন্সে (Ambulance) করে দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বুধবার রাতে কোর্ট চত্বরে ওই চিতাটিকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, গাজিয়াবাদ আদালতের দোতলায় বিকেলে আকস্মিক চলে আসে ওই চিতা বাঘ। তাতেই ছোটাছুটি শুরু হয়। আইনজীবীরা ঘরের মধ্যে নিজেদের তালাবন্ধ করে দেন। হুড়োহুড়ি দেখে চিতা বাঘটি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। পরবিন্দর নাগার (Parvinder Nagar) নামে এক আইনজীবী বলেন, ৪-৫ জন আইনজীবী সহ ১২-১৪ জনকে আক্রমণ করেছে চিতা বাঘটি। অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার অভিষেক শ্রীবাস্তব (Abhishek Srivastav ) অবশ্য বলেন, বাঘের আক্রমণে ছয় জন জখম হয়েছেন। পরে ট্র্যাঙ্কুইলাইজার বন্দুক নিয়ে সেখানে বন দফতরের আধিকারিক কর্মীরা পৌঁছেছেন। তাঁরা্ই বাঘটিকে কাবু করেন। জেলাশাসক রাকেশ কুমার (Ghaziabad district magistrate Rakesh Kumar) ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
অনেকে জখম হলেও বরাত জোরে রক্ষা। প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে কীভাবে বাঘটি সেখানে পৌঁছল তা নিয়ে খোঁজ শুরু হয়েছে। ওই আদালত চত্বর থেকে সাহারানপুর খুব দূরে নয়। মনে করা হচ্ছে, সাহারানপুর জঙ্গল থেকে তা চলে এসেছে রাতের অন্ধকারে। কোর্ট চত্বরে লুকিয়ে ছিল। বিকেলে সে সেখানে বেরিয়ে পড়ে। তাতেই ওই ঘটনা ঘটে।