কালিয়াগঞ্জ: অসহযোগিতা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন জাতীয় তফশিলি কমিশনের (National Scheduled Commission) ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার (Arun Halder)। পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের (Mrityunjay Barman) মৃত্যুর অভিযোগের তদন্তে শুক্রবার বিকেলে কালিয়াগঞ্জের (Kaliagunje) চাঁদগাঁও গ্রামে আসেন জাতীয় তফশিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান। মৃত যুবকের বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন পরিবারের লোকেদের সঙ্গে। এরপরই সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রশাসনের অসহযোগিতা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন অরুণ হালদার। তিনি বলেন, এখানে প্রশাসনের কোনও উচ্চপদস্থ কর্তা নেই, যাদের সঙ্গে আমি আলোচনা করতে পারি কী ঘটনা হয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে এখান থেকে ফিরে চলে যাচ্ছি। এত কষ্ট করে এখানে আমরা এলাম, অথচ এখানে কোনও প্রশাসনের লোক নেই। এই ভাবে কমিশনকে অপমান করার কোনও মানে হয়না। এর উপযুক্ত ব্যবস্থা হবে। সাহেবঘাটা এলাকার নাবালিকার পরিবারের মতোই চাঁদগাঁও গ্রামের মৃত যুবকের পরিবার জাতীয় তফশিলি কমিশনের সমস্ত সহযোগিতা পাবে।
উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার অভিযোগ ওঠে। কালিয়াগঞ্জে এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল। নৃশংস এই ঘটনা চাউর হতেই গোটা রাজ্য রাজ্যনীতি উত্তাল হয়। ২১ এপ্রিল ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে জনতার রোষে পড়েছিল পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে (২৫ এপ্রিল) রাজবংশী তফশিলি এবং আদিবাসী সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে কালিয়াগঞ্জ থানায় স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিছিল করে থানার আসার সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের বাধার কারণে তারা তখন ইট-পাটকেল ছুড়তে আরম্ভ করে। পুলিশ জলকামান (Water Cannon), কাঁদানে গ্যাসের সেল (Tear Gas Cell) ফাটিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলেও আন্দোলনকারীদের পিছু হটাতে সক্ষম হয়নি। বরং পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। থানায় ঢুকে পুলিশকে মারধর করার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee| সামশেরগঞ্জে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে জনজোয়ার
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালিয়াগঞ্জ থানা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশকে লাঠিপেটা করার ভিডিয়ো (Video) পর্যন্ত হাতে এসেছে। এরপর, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ধরপাকড় শুরু করে। মোট ৩২ জনকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় একাধিক মামলা দায়ের হওয়ার পুলিশ ৩২ জনকে বুধবার রায়গঞ্জ আদালতে পেশ করেছিল। তারপরই আদালত ২৩ জনকে ১৪ দিনের জেল কাস্টডিতে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং ৯ জনকে পুলিশ কাস্টডিতে পাঠানো হয়।