কলকাতা: জেলবন্দি বহিষ্কৃত তৃণমূল (TMC) যুবনেতা ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে হুমকির বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন। বৃহস্পতিবার আদালত থেকে বেরনোর মুখে কুন্তল ঘোষ (Kunatal Ghosh) বলেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আমার স্ত্রীকে ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে। আজ টিপানের মাধ্যমে জানতে পারলাম। কোন এজেন্সি হুমকি দিচ্ছে, প্রশ্ন করা হলে কুন্তল বলেন, সেটা পড়ে জানাব। এদিন আদালত ১৯ জুন পর্যন্ত কুন্তলকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
বৃহস্পতিবার কুন্তলের আইনজীবীরা অবশ্য জামিনের আবেদন জানাননি। কিছুদিন আগে কুন্তল অভিযোগ করেছিল, ইডি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্রের মতো কথা বলছে। এদিন শুনানিতে ইডি তার তীব্র প্রতিবাদ করে। ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, আমরা দুর্নীতিবাজদের খুঁজে বের করতে বদ্ধপরিকর। আমরা কাউকে ভয় পাই না। আমরা এর জন্য কারওর কাছ থেকে কোনও সুযোগ নিইনি। আমাদের কোনও রাজনৈতিক রং নেই।
আরও পড়ুন: Kaliagunj | Strike | কালিয়াগঞ্জে মৃত্যু, শুক্রবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক বিজেপির
গীতার শ্লোক উল্লেখ করে ইডির আইনজীবী বলেন, আমার অস্ত্রের দরকার নেই। আমি একা। আমি জঙ্গলের রাজা। আমরা শুধু অর্থ পাচারে জড়িত দুর্নীতিবাজদের শিকার করি। আমাদের কোট দক্ষিণ আফ্রিকার টিম্বাবতী অঞ্চলের সিংহের মতো সাদা। আমরা ভয় বা অনুগ্রহ ছাড়াই দায়িত্ব পালন করি। তিনি বলেন, গীতায় বলেছে, আপনার কর্মের উপর আপনার অধিকার আছে, ফলের উপর কখনই নয়। কর্মের ফল যেন আপনার উদ্দেশ্য না হয়।
এর আগেও কুন্তল একাধিকবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। গত ১ এপ্রিল প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানাকে চিঠি লিখে জানান, ইডি-সিবিআই অফিসাররা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য তাঁর উপর নানা ভাবে চাপ দিয়েছেন। আদালতের যাতায়াতের মুখেও কুন্তল অন্তত দুবার ওই কথাই বলেছন। গত ২৯ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানের এক সভা থেকে অভিষেক জানান, সারদা-কাণ্ডে ধৃত মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদেরও তাঁর নাম বলানোরও জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
অভিষেকের ওই চিঠির সত্যতা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করে ইডি। সেই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ময়দানে অভিষেকের ভাষণের সূত্রেরি কুন্তল এই সব মন্তব্য করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। কেন্দ্রীয় সংস্থা দরকার হলে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এমনকী দুজনকে মুখোমুখিও বসানো যেতে পারে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তার মেয়াদও অবশ্য শেষের মুখে। এরই মধ্যে কুন্তল এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীকে ফাঁসানোর অভিযোগ তুললেন।