নয়াদিল্লি: বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ঔপনিবেশিক আমলের সেনানিবাস ব্যবস্থা (Colonial Era Cantonment System) বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার (Government of India)। দেশের আর্মি ক্যান্টনমেন্ট বোর্গুলিকে (Army Cantonment Boards) ভেঙে দেওয়া হবে (Dissolve)। দেশে এই মুহূর্তে মোট ৬২টি সেনা ছাউনি বোর্ডের অস্তিত্ব রয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, কেন্দ্র সরকার (Central Government) সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেনা ছাউনি বোর্ডগুলির অবলুপ্তির পর, ক্যান্টনমেন্ট অধীনস্থ অসামরিক অঞ্চল অর্থাৎ যেখানে সাধারণ নাগরিকরা (Civilian Areas) বাস করেন, তা স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির (Local Municipal Bodies) হাতে তুলে দেওয়া হবে। আর ক্যান্টনমেন্টের আওতায় থাকা যে সমস্ত স্থান সেনা অঞ্ল (Army Area) হিসেবে পরিচিত, সেগুলিকে মিলিটারে স্টেশনে (Military Stations) পরিণত করা হবে। তবে ৬২টি ক্যান্টনমেন্টকে একসঙ্গে অবলুপ্তিতে পাঠানো হচ্ছে না, ধাপে ধাপে তা করা হবে।
ভারত থেকে ঔপনিবেশিক আমলের সেনা ছাউনি বোর্ডের অবলুপ্তির পর্ব শুরু হচ্ছে হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) কাংড়া জেলার ইয়ল ক্যান্টনমেন্ট (Yol Cantonment, Kangra Distrcit) থেকে। খবরে প্রকাশ, এই ক্যান্টনমেন্টটিকে শীঘ্রই মিলিটারে স্টেশনে পরিণত করা হবে এবং ক্রমান্বয়ে বাকি ৬১টি সেনা ছাউনি বোর্ডে বিলুপ্তির কাজ সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন: MKB | AAP | প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘মন কি বাত’-এ খরচ ৮৩০ কোটি, পুলিশের দাবি মিথ্যে অভিযোগ আপের
প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশ শাসনে (British Rule) থাকার পর ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন (Freedom) হয়েছে। গত বছর দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর (75 Years of Indian Independence) উদযাপন করেছে। কিন্তু ব্রিটিশদের গোলামি থেকে মুক্ত হলেও, ভারতে এখনও প্রচলিত থাকা এই ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড সিস্টেম ইংরেজদের রেখে যাওয়া ঔপনিবেশিক শাসনের পরিচায়ক। দেশ থেকে তা পুরোপুরি মুছে ফেলতেই কেন্দ্র সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সামরিক নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলিকে সেনা স্টেশনে পরিণত করা হচ্ছে এবং বাদবাকি অসামরিক অঞ্চলকে স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। বলা হচ্ছে, কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে, ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে বসবাসকারী ব্যক্তিরা উপকৃত হবেন। সংশ্লিষ্ট দফতরের এক আধিকারিক এপ্রসঙ্গে বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত এই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকজন রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতেন না স্থানীয় মিউনিসিপ্যালিটির মাধ্যমে। এরপর থেকে তাঁরা রাজ্যসরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধার লাভ ওঠাতে পারবেন। অন্যদিকে সেনাবাহিনী নজর দিতে পারবে মিলিটারি স্টেশনের উন্নয়নের কাজে।”
উল্লেখ্য, যেখানে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড সিস্টেমের অবসান ঘটানো হচ্ছে, সেই ইয়ল সেনানিবাসের বাসিন্দাদের আগে থেকেই দাবি ছিল, তাঁদের সেনানিবাস এলাকা থেকে বাদ দেওয়া হোক। সংশ্লিষ্ট ক্যান্টনমেন্টের ১২,০২৮ জন বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সেনা ছাউনি বোর্ড ভেঙে দেওয়া হোক। ২০২০ সালে হিমাচল সরকার এবং কেন্দ্রের আধিকারিকরা আলোচনায় বসার পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এতদিন পর অবশেষে ইয়লের বাসিন্দাদের দাবি পূরণ হতে চলেছে।
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ আমলে ভারতের তৈরি প্রথম ক্যান্টমেন্ট হলো পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট, ১৭৬৫ সালে এটি তৈরি হয়েছিল। বাংলায় মোট ৪টি সেনা ছাউনি বোর্ড রয়েছে। বাকি তিনটি হলো দমদম ক্যান্টনমেন্ট, দার্জিলিংয়ের জলপাহাড় ও লেবং ক্যান্টনমেন্ট।