বেঙ্গালুরু: কর্নাটকে কুরুক্ষেত্র। মহাভারতের কর্ণার্জুনের লড়াই দেখা গেল মতো কন্নড় রাজনীতির ভোট ময়দানে। প্রচারে এসে মাটি কামড়ে লড়াই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর।
জঙ্গিদের (Terror Outfits) তোষণ করার পরম্পরা রয়েছে কংগ্রেসের (Congress)। রবিবারের পর মঙ্গলবার ফের কংগ্রেসকে তুলোধনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও (Rahul Gandhi) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তুলোধনা করে বলেন, এই ভোট নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে নয়। এই ভোট আপনাদের ভবিষ্যতের ভোট। আপনাদের ঘরে যে বাচ্চা আছে, বেকার যুবক আছে, মহিলা আছে এবং বয়োবৃদ্ধরা আছেন, তাঁদের সকলের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে এই নির্বাচন।
এদিন চিত্রদুর্গার জনসভায় মোদি বলেন, দিল্লিতে যখন বাটলা হাউস এনকাউন্টার (Batla House Encounter) হয়েছিল, তখন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা জঙ্গি-মৃত্যুর জন্য অশ্রুবর্ষণ করেছিলেন। যখন সার্জিকাল স্ট্রাইক (Surgical Strike) হয়েছিল কংগ্রেস আমাদের সেনাবাহিনীর (Indian Army) ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কর্নাটকে কংগ্রেস সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছে। মোদি বলেন, বিজেপি সন্ত্রাসবাদের মাজা ভেঙে দিয়েছে। তোষণের রাজনীতির খেলা খতম করে দিয়েছে। কংগ্রেস এবং জনতা দল সেকুলার জঙ্গিদের ফুলেফেঁপে উঠতে দিয়েছে। রাজ্যের মঙ্গলের জন্য কিছুই করেনি।
পরে হোসপেট-এ এক জনসভায় মোদি বলেন, কংগ্রেস প্রথমে ভগবান রামকে বন্দি করে রেখেছিল। এখন যারা জয় বজরঙ্গবলি বলছে, তাদের বন্দি করার কথা বলছে। উল্লেখ্য, এদিনই কংগ্রেস তাদের ভোট ইস্তাহারে ক্ষমতায় এলে রাজ্যে বজরং দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কংগ্রেস মানুষের আস্থা হারিয়েছে বলে মোদির আক্রমণ, কংগ্রেসের ভোট প্রতিশ্রুতির কোনও নিশ্চয়তা নেই। সব মিথ্যা কথা। আমরা কর্নাটককে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। সেই জন্যই আমরা চাই এখানে আবার ডাবল ইঞ্জিনের সরকার আসুক। তাই রাজ্যের মানুষ কংগ্রেস এবং জেডিএসকে নিয়ে সতর্ক থাকুন। এরা পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি করে। দুর্নীতি এবং বিভাজন এদের মজ্জাগত।
অন্যদিকে, রাহুলের অভিযোগ, বর্তমানে যে রাজ্য সরকার চলছে তা চুরি করে দখল করা। তিন বছর আগে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে বিজেপি চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে সরকার দখল করেছিল। বিজেপির দুর্নীতি, বেকারি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এই নির্বাচনের মূল ইস্যু।
উল্লেখ্য, এদিনই ইস্তাহার প্রকাশ করে কংগ্রেস। মঙ্গলবার কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, রাজ্য সভাপতি ডিকে শিবকুমার এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। ভোট প্রতিশ্রুতিতে কংগ্রেসও বিজেপির ধাঁচে ধর্মের কপিকল নিয়ে নাড়াচাড়া করেছে। রাজ্যে ক্ষমতায় এলে তারা বজরং দল এবং পিএফআইয়ের মতো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করবে বলে কথা দিয়েছে।
খয়রাতির রাজনীতির অঙ্গ হিসেবে কংগ্রেস প্রত্যেককে ২০০ ইউনিট করে বিদ্যুৎ নিখরচায় দেবে। তার নাম দেওয়া হয়েছে গৃহজ্যোতি। গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পে প্রত্যেক পরিবারের কর্ত্রীকে মাসে ২ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। অন্নভাগ্য প্রকল্পে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী সকলকে বিনা পয়সায় ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। বেকার স্নাতকদের যুবানিধি প্রকল্পে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা এবং বেকার ডিপ্লোমা যুবকদের ২ বছর মাসে ১৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। কর্নাটক পরিবহণ এবং বেঙ্গালুরু নগর বাসে সকল মহিলারা বিনা পয়সায় যাতায়াত করতে পারবেন।