ভুবনেশ্বর: বিভীষিকার রেশ নিয়েই গড়াল করমণ্ডলের চাকা (Coromandel Express)। বাহানাগা (Bahanaga)স্টেশনে ট্রেন ঢুকতেই যাত্রীদের চোখে-মুখে আতঙ্ক। গত সপ্তাহের শুক্রবারে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর এই প্রথম চাকা গড়াল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। তবে এদিন ট্রেনের (Train) গতিবেগ ছিল অনেকটাই কম। দুর্ঘটনার দিন বাহানাগা স্টেশন দিয়ে পার হওয়ার সময় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার। যা সজোরে গিয়ে ধাক্কা মেরেছিল লুপ লাইনে থাকা আকরিক লোগা বনহনকারী একটি মালগাড়িতে (Goods Train)। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি উঠে গিয়েছিল মালগাড়ির মাথায়। অভিশপ্ত সেই শুক্রবারের রেশ যেন এখনও সকলের মনে টাটকা।
চেন্নাই থেকে ডাউন ট্রেনটি শালিমারের উদ্দেশে রওনা দেয় ৫ জুন। গতকাল অর্থাৎ ৬ জুন ভদ্রক ও বালাসোরের মাঝে বাহানগা বাজার স্টেশনের উপর দিয়ে যায় এক্সপ্রেস ট্রেনটি। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতি ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। গত শুক্রবার যখন ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, তখন সেটি ১২৮ কিমি বেগে ছুটছিল। অপরদিক দিয়ে আসা হামসফর এক্সপ্রেসও সেদিন ১২৬ কিমি প্রতি ঘণ্টায় ছুটছিল। তবে হামসফর আড়াই ঘণ্টা দেরিতে চলছিল। এদিকে শুক্রবারের মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার স্মৃতি পিছনে ফেলেই সোমবার চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ছাড়ে শালিমারগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ট্রেনটি ৬ জুন সকাল ১০টা ৩৭ মিনিটে ভদ্রক স্টেশনে পৌঁছায়। সেখান থেকে বালেশ্বর পৌঁছতে ট্রেনটির সময় লাগে ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিট। সাধারণত ভদ্রক থেকে বালেশ্বর যেতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ৪৭ মিনিট লাগার কথা। তবে দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে প্রথমবার এই স্থান দিয়ে খুবই ধীর গতিতে ছোটে ট্রেনটি। এর জেরে প্রায় আড়াই গুণ সময় বেশি লাগে এই পথ অতিক্রম করতে। জানা গিয়েছে, ট্রেনটি যখন বাহানগা স্টেশন পার করছিল, তখন এর গতি ছিল মাত্র ৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
আরও পড়ুন:Municipality Scam | পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই হানা নগোরন্নয়ন দফতরে
বুধবার থেকে নির্ধারিত সময়েই মিলবে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরি জানিয়েছেন, আগামীকাল বিকেল সওয়া ৩টে নাগাদ শালিমার স্টেশন ছেড়ে চেন্নাইয়ের উদ্দেশে রওনা হবে ট্রেনটি। এদিকে, ইতিমধ্যেই এই বালেশ্বর রেল দুর্ঘটনার তদন্ত নিয়েছে সিবিআই। মঙ্গলবার একপ্রস্থ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ঘুরে দেখেন বাহানাগা বাজার স্টেশন, রিলে রুম। পাশাপাশি কথা বলেন রেলকর্মীদের সঙ্গে। বুধবারও সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা। এই দুর্ঘটনার পিছনে কি আদৌ সিগন্যালিং সিস্টেমই দায়ী, না কি কোনওরকম অন্তর্ঘাত হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। একাধিক তত্ত্ব উঠে আসছে সামনে।