এফ সি গোয়া–৩ এটিকে মোহনবাগান–০
(ডোহলিং, আমাউট, সাদাউই)
জঘন্য ফুটবল খেলল এটিকে মোহনবাগান। স্মরণকালে এত বাজে ফুটবল খেলতে দেখা যায়নি তাদের। মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো গত মরসুমের মাঝপথে গোয়া ছেড়ে এসেছিলেন সবুজ মেরুনের দায়িত্ব নিয়ে। তাঁর কাছে একটা ব্যাক্তিগত চ্যালেঞ্জ ছিল গোয়ার মাঠে গিয়ে গোয়াকে হারিয়ে আসা। কিন্তু তাঁর ফুটবলারদের বিস্ময়কর ব্যর্থতায় তিন গোলে হেরে মাথা নীচু করে ফিরে আসতে হচ্ছে তাঁকে। প্রথম দশ মিনিটেই গোয়া যা ঝটকা মেরেছিল তাতেই দু গোলে পিছিয়ে পড়ার কথা বাগানের। কিন্তু তাদের গোলকিপার বিশাল কাইথের চমৎকার গোলকিপিংয়ের জন্য গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় জুয়ানের দল। কিন্তু সেই যে ম্যাচের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো শুরু বাগানের সেটা বজায় রইল শৈষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত। তিন গোলে যে টিম হারে তার ডিফেন্ডারদের দিকেই আঙুল তুলতে হবে। সত্যি এদিন প্রীতম কোটাল, ব্রেন্ডন হামিলরা খুবই বাজে খেলেছেন। ওভরহেড লব এলেই গেল গেল রব উঠে গেছে বাগান ডিফেন্সে। উল্টো দিকে তাদের অ্যাটাকিং লাইনও খুব খারাপ। যে লিস্টন কোলাসো এবং হুগো বুমোর উপর বাগান আ্যাটাক অনেকাংশেই নির্ভরশীল তাঁরা দুজনেই ফ্লপ শুধু নয়, সুপারফ্লপ। মনবীর সিং, জনি কাউকো চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাদের সেভাবে ডানা মেলতে দেননি আনোয়ার আলির নেতৃত্বে গোয়া ডিফেন্স। তাই তিন গোলে জিতলেও গোয়ার সামনের দিকের কেউ নয়, ম্যাচের সেরা হলেন সেন্টার ব্যাক আনোয়ার আলি। এই জয়ের ফলে ছয় ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে গোয়া উঠে এল তিন নম্বরে। আর ছয় ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে মোহনবাগান রয়ে গেল ছয় নম্বরে।
গোয়ার কোচ কার্লোস পেনাও স্পেনের লোক। স্বদেশীয় জুয়ান ফেরান্দোর বিরুদ্ধে তাঁর মন্ত্র ছিল শুরু থেকেই আক্রমণের। ফাতোরদার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের হাজার তিরিশ সমর্থকের সমর্থনে শুরু থেকেই গোয়া নিজেদের মধ্যে পাস খেলতে খেলতে চেপে ধরে মোহণবাগানকে। তাদের দুই বিদেশি আলভারো ভাস্কুয়েজ এবং এডু বেদিয়াকে সামনে রেখে তারা আক্রমণে যায়। এই সময় বাগান মাঝ মাঠের কোনও অস্তিত্ব ছিল না। তিন মিডফিল্ডারের মধ্যে হুগো বুমো ছিলেন প্যাসেঞ্জার। দীপক টেংরি চেষ্টা করেছেন ডিফেন্স করার। আর জনি কাউকো উৎসাহী ছিলেন আক্রমণ গড়ার কাজে। গোয়া যখন আক্রমণে আসছিল এক সঙ্গে ছয় থেকে সাতজন উঠছিল। এদের সামাল দিতে প্রীতম কোটালদের জান ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে।
প্রথমার্দ্ধটা কোনও রকমে সামাল দিয়ে পঞ্চাশ মিনিটেই গোল খেয়ে যায় বাগান। গোয়ার লেফট ব্যাক আইবানভা ডোহলিং বাঁ দিক দিয়ে উঠে সেন্টার করার মতো জায়গা খুঁজছিলেন। তাঁর সঙ্গে লেগে ছিলেন আশিস রাই। কিন্তু আশিস কর্নার করার চেষ্টা না করে শট নিতে দিলেন ডোহলিংকে। প্রায় শূণ্য ডিগ্রি থেকে বাঁ পায়ে শট নিয়ে গোল করলেন গোয়ার লেফট ব্যাক। এর পর বাগানিরা বেশ কয়েকটি নিষ্ফল আক্রমণ করে। কিন্তু আনোয়ারদের পরাক্রমে তা থেকে কোনও বিপদ হয়নি গোয়ার। ৭৬ মিনিটে পরিবর্ত ফুটবলার আমাউট গোল করলেন কর্নার থেকে। এডু বেদিয়ার কর্নার সরাসরি এসে পড়ল আমাউটের মাথায়। দীর্ঘকায় আমাউট প্রায় বিনা বাঁধায় গোল করলেন। কিন্তু তখনও মোহনবাগানের দুঃখের কাহিনী শেষ হয়নি। ৮২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মরক্কোর স্ট্রাইকার নোয়া সাদৌনি যে শট নিলেন তাতে এত জোর ছিল যে বিশাল হাত ঠেকিয়েও আটকাতে পারেননি। এভাবেই শেষ হল গোয়ার মোহনবাগানের জঘন্য ফুটবল এবং বিশ্রি হার।