কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment scam) মামলায় জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেল জেলবন্দি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) স্ত্রী এবং পুত্রের (Wife and Son)। বুধবার ইডির (ED) বিশেষে আদালতে (Special Court) হাজিরা দিয়েছিলেন মানিকের স্ত্রী শতরূপা (Shatarupa) এবং ছেলে সৌভিক (Souvik)। তাঁরা জামিনের (Bail) আবেদন জানান। আদালত তা খারিজ করে দুজনকেই ৬ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতে (Jail Custody) রাখার নির্দেশ দেয়। আবেদন খারিজ হতে আদালত থেকেই দুজনকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়।
এর আগে ইডি যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট (Suplimentary chargesheet) দাখিল করেছিল, তাতে শতরূপা এবং সৌভিকের নাম ছিল। শতরূপার আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলকে গত বছরের ২৪ নভেম্বর ৪১ ধারায় নোটিস পাঠানো হয়। তখন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হল। শতরূপা নিজেই আদালতে এসেছেন। যখন প্রথম চার্জশিট দেওয়া হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ সাতজনের বিরুদ্ধে, সেখানে শতরূপার নাম ছিল না। আর যখন তিনি আত্মসমর্পণ করলেন, তখন ইডি ঝাঁপিয়ে পড়ল জামিনের বিরোধিতা করতে।
সৌভিকের আইনজীবী বলেন, যতবার ইডি কিংবা সিবিআই তলব করেছে, ততবারই তিনি হাজিরা দিয়েছেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারিও তাঁকে ডাকা হয়। তখনও গ্রেফতার করা হল না।
ইডির তরফে এদিন আদালতে অভিযোগ করা হয়, বিদেশ যাত্রা নিয়ে সৌভিক তথ্য গোপন করেছেন। ২০১৭ সালের মে এবং জুলাই মাসে দুবার তিনি লন্ডনে যান। ইডির দাবি, পড়তে কিংবা ঘুরতে নয়। দুবারই তিনি গিয়েছিলেন সম্পত্তি সংক্রান্ত কাজে। অথচ সৌভিক দাবি করেন, প্রথমবার তিনি পড়ার জন্য গিয়েছিলেন। তাও প্রথমবারের সফরের কথা অস্বীকার করেন। পরে বলেন, আমি ভুলে গিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন: UEFA Champions League: গোটা ইংল্যান্ডের সম্মান আজ ম্যান সিটির হাতে, প্রতিপক্ষ জার্মানির ক্লাব
ইডির আরও অভিযোগ, মানিকের পরিবার যে দুর্নীতি করেছে, তার টাকা মালদ্বীপ থেকে ভিয়েতনাম পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো হয়েছে। পরিবারের লোকেরা সব জানতেন। বিচারক সৌভিকের আইনজীবীকে বলেন, তাঁর ভিসাতে কোথাও কোথাও ছাত্র লেখা আবার কোথাও লেখা আছে, রেসিডেন্স এবং রিএন্ট্রি। বিষয়টা বুঝিয়ে বলুন। আইনজীবী জানান, ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে তিনি প্রথম পড়তে যান লন্ডনে। তখন ভিসার জন্য আবেদন করেন। তাঁকে বায়োমেট্রিক রেসি়ডেন্ট পারমিট দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে নতুন করে ভিসা চাওয়া হয়নি। যেহেতু রেসিডেন্ট পারমিটে গিয়েছিলেন, তাই রেসিডেন্ট রিএন্ট্রি লেখা আছে।
এরই মাঝে একবার মা এবং ছেলেক কথা বলতে দেখে বিচারক বলেন, আপনারা কিন্তু হেফাজতে আছেন। মনে রাখবেন। পর বিচারক ইডিকে বলেন, অ্যাকাউন্টে টাকা পেয়েছেন, বিলেতে রেসিডেন্সে্র খোঁজ পেয়েছেন, তাহলে হেফাজতে নেননি কেন। ইডির আইনজীবী বলেন, সেই সময় মনে হয়নি, হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে। তার মানে এই নয়, আদালত তাঁদের জেলে পাঠাবে না।
দুপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক দুজনকেই ৬ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সৌভিকের ছেলের একটি সংস্থার মাধ্যমেও নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে বলে ইডির অভিযোগ। মা এবং ছেলের নামে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। এমনকী মৃত ব্যক্তির সঙ্গেও শতরূপার অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে ইডির দাবি।