চেন্নাই: তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) কোনও মন্দিরে (Temples) এবার থেকে আর মোবাইল ফোন (Mobile Phone) নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। পূজা-অর্চনার স্থানের পবিত্রতা এবং শুদ্ধাচার (Purity and Sanctity) বজায় রাখতে এই আদেশ জারি করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট (Madras High Court)। তবে মন্দিরে আসা দর্শনার্থীরা যাতে কোনও রকম অসুবিধার মধ্যে না পড়েন, তার জন্য তামিলনাড়ুর সমস্ত মন্দিরে লকার রাখার বন্দোবস্ত করারও নির্দেশে দিয়েছে আদালত। আদালতের এই নির্দেশ যাতে অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়, তার জন্য নিরাপত্তা কর্মীও নিয়োগ করা হবে।
সুব্রহ্মণ্য স্বামী মন্দিরে (Subramanya Swamy Temple) মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার আবেদনের পরই এই রায় দিল আদালত। আদালতের সামনে আবেদনকারীর যুক্তি ছিল, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে লোকজন বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। দেবতার ছবি তোলার অর্থ ‘আগাম’-এর নিয়ম (Rules of Agamas) উলঙ্ঘন করা। তাছাড়া এর পিছনে আরও যুক্তি হলো, মন্দিরের ভিতরকার ছবি তুললে নিরপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এবং মহিলাদের সম্মতি ছাড়া তাঁদের ছবি তুললে মহিলাদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়। আবেদনে এটাও বলা হয়েছিল, মন্দিরে প্রবেশের জন্য শালীনতা বজায় রাখার পোশাকবিধিরও (Dress Code) যেন নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: Delhi Man Incident: আফতাবে উদ্বুদ্ধ আরও এক প্রেমিক, সঙ্গীনিকে খুন করে ধরা পড়ল যুবক
এই নির্দেশ জারি করার ক্ষেত্রে বিচারপতিরা যে বিষয়গুলি পর্যালোচনা করেছেন, তা হলো মন্দির একটি বিশাল বড় প্রতিষ্ঠান এবং ঐতিহ্যগতভাবে মন্দির সবারই জীবনের একটি কেন্দ্র। মন্দির শুধুমাত্র পূর্জা-অর্চনার স্থানই নয়, মানুষের সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মন্দিরে লোকজন দেবত্ব এবং আধ্যাত্মিকতা অনুভব করার জন্য আসেন। এই অভিজ্ঞতাকে সমর্থকারী পদ্ধতি এবং কাঠামোগুলি মন্দির তৈরি করে, তাই মন্দিরের নিজস্ব পরিচালনা প্রয়োজন।
বিচারকরা এটাও পর্যবেক্ষণ করেছেন, সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমস্ত ব্যক্তির স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন, অনুশীলন এবং প্রচার করার অধিকার রয়েছে। তাতে কোনও বিতর্ক থাকতে পারে না। তবে, এই ধরনের কাজ এবং অনুশীলনের স্বাধীনতা মন্দিরের প্রাঙ্গনে, প্রবিধানের অধীন হতে পারে। মন্দিরে উপাসনা ও সেবায় অনুসরণীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কিত নিয়মগুলি নির্ধারণ করে আগম।
উল্লেখ্য, হিন্দু ধর্মে আগমের তিনটি মূল ধারা রয়েছে – শৈব, বৈষ্ণব এবং শাক্ত (Shaiva, Vaishnava, and Shakta)। চতুর্থ ধারাটি হলো স্মার্ত (Smarta)।