নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে দেশের আঞ্চলিক দলগুলির ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। শনিবার সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট যোগ্যতা রয়েছে। তবে তাঁকে বিজেপি বিরোধী সমস্ত ক্ষোভকে একজায়গায় নিয়ে আসতে হবে। যদিও সেই উদ্যোগ এখনও অস্পষ্ট। তাঁর মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী সমস্ত ক্ষোভকে এক জায়গায় নিয়ে এসে বিভাজনকে যদি দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন, তবে অবশ্যই তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে এগিয়ে থাকবেন।
আগামী বছর দেশে লোকসভা ভোট। এখন থেকেই দুই প্রধান যুযুধান বিজেপি এবং কংগ্রেস সহ সব দল প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখেই ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসার ডাক দিয়ে রাহুল গান্ধী যে ভারত জোড়ো যাত্রা চালাচ্ছেন, তা প্রায় শেষের পথে। আগামী ৩০ জানুয়ারি শ্রীনগরে সেই যাত্রার সমাপ্তি ঘটবে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক বিরোধী নেতা-নেত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দিয়ে ভারত জোড়ো যাত্রার সমাপ্তি পর্বে শামিল হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কারা কারা খাড়্গের আবেদনে সাড়া দেবেন তা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। তবে ভারত জোড়ো যাত্রায় বিপুল সাড়া বিজেপিকে যে কিছুটা চিন্তায় ফেলেছে, তা বোঝা যাচ্ছে।
রাহুল গান্ধী বেশ কিছু দিন আগেই ভারত জোড়ো যাত্রার ফাঁকে মন্তব্য করেছিলেন, আঞ্চলিক দলগুলির পক্ষে একা বিজেপির মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। পক্ষান্তরে তৃণমূলের প্রস্তাব বিরোধী দলগুলি যে যেখানে শক্তিশালী, তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি বিরোধিতার পরিসর গড়ে উঠুক লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে। এরই মধ্যে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্যতার কথা সামনে আনায় রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্ক তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ওই সাক্ষাতকারে বলেন, এটা মনে করলে ভুল হবে, আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি একাই ঘোড় দৌড়ে এগিয়ে যাবে। আওমার মনে হয, আঞ্চলিক দলগুলিরও বিশেষ ভূমিকা থাকবে। এই মুহূর্তে তৃণমূল ছাড়াও ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টির মতো দলগুলিরও গুরুত্ব রয়েছে। কংগ্রেস সম্পর্কে তিনি বলেন, আগের থেকে অনেক দুর্বল হয়েছে তারা। লোকসভা ভোটে তারা খুব একটা কিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। তবে কংগ্রেসই একমাত্র দল যাদের সর্বভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে।
বিজেপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে তিনি জানান, বিজেপি ভারতের ধারণাটাকেই খারাপ করেছে। শুধু হিন্দু ভারতের কথা বলে বহুত্ববাদের ধারণাকেই খাটো করে দিয়েছে। হিন্দিভাষী ভারত বানাতে চাইছে বিজেপি। তাই বিজেপির বিকল্প না এলে তা খুবই দুঃখের বিষয় হবে।