দিঘা: চার দিনের জেলা সফরে পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Midnapore) গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার খেজুরিতে প্রশাসনিক বৈঠকের পর মঙ্গলবার দিঘায় জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন দিঘার জনসভা থেকে ফের বিজেপি (CPM) ও সিপিএম (CPM)-কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা। রিষড়ার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি (BJP)। কাউকে ছাড়া হবে না। প্রশাসন সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরও বলেন, বাইরে থেকে গুন্ডা নিয়ে আসছে বিজেপি। ভাড়া করে দুষ্কৃতী এনে বাংলায় অশান্তি ছড়াচ্ছে। বিজেপি সারাক্ষণ হিংসা ছড়ায়। অশান্তি বাংলার সংস্কৃতি নয়। বাংলার মানুষ শান্তি চায়। এখন বাম-রাম এক হয়েছে। মিছিলে বন্দুক নিয়ে নাচছে, এসব সিপিএমও করত। সিপিএমের হার্মাদরা আজ বিজেপির ওস্তাদ। রিষড়ার প্রসঙ্গে আরও বলেন, যে ধরা পড়েছে সে বাংলার কেউ নন। মুঙ্গের থেকে ভাড়া করে নিয়ে এসেছে। প্রশাসন কাউকে রেয়াত করবে না। অশান্ত করার চেষ্টা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা।
এদিন নাম না করে ফের একবার শুভেন্দুকে আক্রমণ করেন তিনি। মমতা বলেন, কতগুলো হার্মাদকে আমরা চাকরির দায়িত্ব দিয়েছিলাম। আমাদের থেকে সবকিছু নিয়ে বিজেপিতে গিয়েছে। গদ্দারগুলোকে খাইয়ে দাইয়ে মানুষ করেছি। ওই গদ্দারগুলো চাকরি বিক্রি করেছে বলেও অভিযোগ তাঁর। মমতা বলেন, আমরা কারও চাকরি খাই না, চাকরি দিই। সকলের আইনি পথে চাকরি হবে বলেও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।
একইসঙ্গে নন্দীগ্রামে বিজেপি ভোট লুট করেছে বলেও দাবি করেন মমতা। তিনি বলেন, নন্দীগ্রামে ভোট লুটেছে বিজেপি। লোডশেডিং করে ভোট লুটে নন্দীগ্রামে জিতেছে। মানুষের ঘরেও কুলাঙ্গাররা জন্মায়। বাংলা দখল করার ক্ষমতা নেই এদের।
উল্লেখ্য, সামনেই রাজ্যে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে। তার আগে শাসকদলের নিয়োগ দুর্নীতি সহ একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলনে নেমেছে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল। এই পরিস্থিতিতে অনেকটাই কোণঠাসা তৃণমূল। রাজ্যের একাধিক জায়গায় প্রায় রোজই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলের নেতানেত্রীদের। সে কথা মাথায় রেখে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে জেলা সফরে নেমেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারের পর মঙ্গলবার দিঘার জনসভা থেকে দলীয় কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে পথে নেবে লড়াইয়েরও বার্তা দেন নেত্রী। পাশাপাশি আগামী পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে বাংলা থেকে বিতাড়িত করার ডাক দেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০২১-এর পথে হেঁটে মমতাকেই সামনে রেখে লড়তে চাইছে তৃণমূল। যদিও তৃণমূল তাদের দুর্নীতিকে পিছনে রেখে পঞ্চায়েতে কতটা ভালো ফল করতে পারে তা সময়ই বলবে।