নয়াদিল্লি: আদানি গ্রুপের আর্থিক বিবৃতি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে ভারতের কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক (India’s Ministry of Corporate Affairs)। বিগত কয়েক বছরে আদানি গোষ্ঠীর যাবতীয় আর্থিক বিবৃতি এবং লেনদেন সংক্রান্ত সমস্ত হিসাব পরীক্ষা করে দেখছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। খবরে প্রকাশ, শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুই সরকারি আধিকারিক এই কথা এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন। তারপরই এই খরব দেশের সংবাদ মাধ্যমে চাউর হয়েছে। জানা গিয়েছে, বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার (Regulatory Authorities) কাছে হিসাব ও ব্যবসা সংক্রান্ত যেসব নথিপত্র জমা করেছে (Regulatory Submissions) আদানি গোষ্ঠী, তা পর্যালোচনা (Review) করে দেখছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: Vodafone-Idea: ১৬ হাজার কোটি টাকার শেয়ার নিচ্ছে কেন্দ্র, স্বস্তি ঋণে জর্জরিত ভোডাফোন-আইডিয়া
বর্তমানে বিপুল পরিমাণ ঋণের (Debt) দায়ে ধুঁকছে আদানি গোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানি, তাঁর সংস্থা গত এক সপ্তাহে শেয়ার বাজারে (Share Market) পতনের সম্মুখীন হয়েছে। মার্কিন শর্ট-সেলার সংস্থা হিডেনবার্গ রিসার্চ (US-Based Short-Seller Hindenburg Research) আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অফশোর ট্যাক্স হেভেনস (Offshore Tax Havens )-এর অনুপযুক্ত ব্যবহার এবং স্টক ম্যানিপুলেশন (Stock Manipulation)-এর গুরুতর অভিযোগ এনেছে। এখানে উল্লেখ্য, অফশোর ট্যাক্স হেভেনস হল, সংশ্লিষ্ট দেশে কোনও বিদেশি ব্যক্তি কিংবা সংস্থাকে দেওয়া কর ছাড় এবং স্টক ম্যানিপুলেশন হল, কৃত্রিমভাবে সরবরাহ ও চাহিদাকে প্রভাবিত করে শেয়ার বাজারে সংস্লিষ্ট সংস্থার শেয়ার দর বৃদ্ধি করা। যদিও গৌতম আদানি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সংস্থার বক্তব্য, তাঁরা সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমস্ত নিয়ম-কানুন মেনেই ব্যবসা করেছে এবং যাবতীয় নথিপত্রও জমা করেছে এবিষয়ে।
গত ২৪ জানুয়ারি হিডেনবার্গের রিপোর্টে প্রকাশিত হয়। তারপর থেকে পতনের সূত্রপাত। আদানি গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই তাদের বাজার দর অর্ধেক খুইয়ে বসেছে। শেয়ার-বাজার বিষয়ক পূর্বাভাস দেওয়া একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার বক্তব্য, এরকম চলতে থাকলে আগামী দিনে বাজার থেকে পুঁজি জোগাড় করতে সমস্যায় পড়বে আদানি গোষ্ঠী। শুক্রবার শেয়ার বাজার আদানি গোষ্ঠীর দর ১০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আদানি পাওয়ার, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি টোটাল গ্যাস এবং আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ার কেনাবেচা সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যায়, তারপর ফের চালু হলেও পতন ঠেকানো যায়নি। সবমিলিয়ে ভারতীয় শেয়ারবাজারে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় বিরোধীদের দাবিতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক তদন্ত শুরু করেছে। তবে তা নিয়ে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া জানায়নি আদানি গোষ্ঠী। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, আদানি গোষ্ঠীর এই পতন অব্যাহত থাকলে, তা ভারতীয় অর্থনীতির (Indian Economy) জন্য খুব একটা সুখকর হবে না।