বছর দশেক আগে ইউপিএ সরকারে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে, রেলে চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে চাকরি প্রার্থীদের জমি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগ ওঠার পর তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। সেই অভিযোগের তদন্তের পর শুক্রবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট জমা দেয়। আর সে খবর পেয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তাঁর দাবি, “মামলায় কিছুই নেই। আরজেডি এবং জেডিইউ একজোট হয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে বিহারে মহাগাটবন্ধনের সরকার তৈরি হওয়ার পরেই লালুজির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
শনিবার অত্যন্ত স্পষ্ট বক্তব্যেই লালুপ্রসাদ যাদবের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ওই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পাঁচ বছর আগে কী হয়েছিল? আমরা আর আরজেডি আলাদা হয়েছিলাম। কিন্তু তখন কোনও তদন্ত এগোয়নি ওই মামলায়। আমি ওই অভিযোগের যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখেছি, সেখানে কিছুই নেই। এখন যেহেতু আমরা বিজেপির সঙ্গে নেই, তাই ফের নতুন করে মামলা শুরু করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, লালুপ্রসাদ এবং তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। লালুপ্রসাদ এবং তাঁর স্ত্রী দু’জনেই বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত তাঁদের ছেলে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী। গত ১৮ মে লালু-রাবড়ি এবং তাঁদের মেয়ে মিসা ভারতী ও হেমা যাদব ছাড়াও চাকরি পাওয়া ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল সিবিআই। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এখন জামিনে আছেন। এই প্রসঙ্গে আরজেডি বারবার দাবি করে এসেছে, লালুপ্রসাদ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা করা হয়েছে তা কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক চক্রান্ত।
সম্প্রতি বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নতুন সরকার গঠন করেছেন নীতীশ কুমার। যেখানে উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব। আর তারপরেই নতুন করে জমির বিনিময়ে চাকরির মামলায় তৎপর হয়েছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, লালুপ্রসাদ যাদব ও তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং তাঁদের দুই কন্যা রেলে নিয়োগের বিনিময়ে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে জমি নিয়েছিলেন। লালু রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই দুর্নীতি হয়েছিল বলে, অভিযোগ সিবিআই-এর। জানা গিয়েছে, চার্জশিটে রেলের এক প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজারেরও নাম রয়েছে। এবার লালুজির বর্তমান সহযোগী এবং দীর্ঘদিনের সতীর্থ নীতীশ কুমার তাঁর সমর্থনে এগিয়ে আসায় গোটা বিষয়টি বাড়তি রাজনৈতিক মাত্রা পেল বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল।