কলকাতা: এজলাস বয়কট নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্ট (calcutta Highcourt) বা অন্যত্র কোনও বিক্ষোভ, মিছি্ল, অবস্থান করা যাবে না। কোথাও পোস্টার (Poster) দেওয়া যাবে না। মঙ্গলবার তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলায় রাজ্য বার কাউন্সিল, বার অ্যাসোসিয়েশন, বার লাইব্রেরি, ইনকর্পোরেটেড ল সোসাইটি এবং বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকেও সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে।
গত ৯ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta Highcourt) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Rajasekhar Mantha) এজলাস বয়কট ঘিরে ধুন্ধুমার ঘটে। এজলাসের (Ageless) দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে বিক্ষোভ দেখা্য আইনজীবীদের একাংশ। ইচ্ছুক আইনজীবীদের ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয়। বিক্ষোভকা্রীদের অভিযোগ ছিল, বিচারপতি মান্থার বিভিন্ন নির্দেশ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে এবং রাজ্য সরকারের বিপক্ষে যাচ্ছে। এরই প্রতিবাদে ওই বিক্ষোভ চলে। একই সঙ্গে বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কটেরও দাগ দেওয়া হয়। এখনও এক শ্রেণির আইনজীবী ওই এজলাস বয়কট চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: Baruipur TMC: জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতিকে খুনের চেষ্টা কর্যকারী সভাপতির বিরুদ্ধে
ঘটনার দিনই হাইকোর্ট চত্বর বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টারে পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে যায়। পোস্টার পড়ে বিচারপতির যোধপুর পার্কের বাড়ির সামনেও। এ ব্যাপারে বিচারপতি মান্থা বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন।প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এই মামলা শোনার জন্য তিন সদস্যের বেঞ্চ গঠন করেন। বেঞ্চের সদস্যরা হলেন বিচারপতি টি এস শিবঘ্ননম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস। মঙ্গলবার সেই বেঞ্চেই এই মামলার শুনানি শুরু হয়। পরবর্তী শুনানি ২ ফেব্রুয়ারি।
একই সঙ্গে পোস্টার পড়া নিয়েও একটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা হয় হাইকোর্টে। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, বিচারপতি মান্থার এজলাসে এবং বাড়ির সামনে পোস্টার লাগানো নিয়ে নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে পুলিশকে এই বিষয়ে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
এদিকে এদিন বৃহত্তর বেঞ্চও কলকাতার পুলিশ কমিশনার, হাইকোর্টের এসিপি এবং লেক থানার ওসিকে নোটিস ইস্যু করে। কে বা কারা পোস্টার ছাপানোর বরাত দিয়েছিল, কোন ছাপাখানা থেকে তা ছাপানো হয়েছিল, কে বা কারা পোস্টার লাগিয়েছিল, সে সব নিয়ে পুলিশ কমিশনারকে ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। লেক থানার ওসি সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি পুলিশ কমিশনারকে দেবেন। পেনড্রাইভ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র দেবেন হাইকোর্টের এসিপি।
শুনানির শুরুতেই বেঞ্চ এদিন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল চৈতালি দাসকে ডেকে পাঠায়। বিচারপতি শিবঘ্ননম বলেন, বিচারপতি মান্থা বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের শনাক্ত করতে বলেছেন। কিন্তু হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কিংবা বার কাউন্সিলের সদস্যরা তো শনাক্ত করতে আসবেন না। তাহলে কেমন করে আদালতের নির্দেশ মানা হবে। প্রবীণ আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, সিসিটিভির ফুটেজ থেকেই সেই শনাক্তকরণ সম্ভব।
এদিন আদালতে তাপস মাইতি নামে এক আইনজীবী চিঠি পেশ করা হয়। বিচারপতি শিবঘ্ননম জানান, ওই চিঠিতে ১২ জন আইনজীবীর নাম রয়েছে, যাঁরা ৯ জানুয়ারি ১৩ নম্বর এজলাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। তবে এই ১২ জনের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হচ্ছে না।