ব্রিটেনের ইতিহাসে সবথেকে বেশি দিন ধরে রানির দায়িত্ব সামলেছেন। দীর্ঘ ৭০ বছর ব্রিটেনের সিংহাসনে বসেছিলেন তিনি। ৯৬ বছর বয়সে মারা গেলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ((Queen Elizabeth II)। বাকিংহাম প্রাসাদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে বালমোরাল প্রাসাদে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন রানি।’ শুক্রবার তাঁর দেহ লন্ডনে নিয়ে আসা হবে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। চার সন্তান-সহ রানী এলিজাবেথ স্কটল্যান্ডে বসবাস করছিলেন। চিকিৎসকদের কড়া নজরদারিতে ছিলেন তিনি। বাকিংহাম প্যালেস রানীর মৃত্যুর খবর সরকারি ভাবে জানিয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ পরিবারের সদস্যরা স্কটল্যান্ডে পৌঁছেছেন। সব চেয়ে বেশি সময় ধরে ব্রিটেনের রানী ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবারই রানী লিজ ট্রাসকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে অভিষিক্ত করেন। ট্রাস স্কটল্যান্ডে বালমোর ক্যাসেলে রানীর সঙ্গে দেখাও করেন। কয়েকদিন ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সকালে বাকিংহাম প্যালেস জানায়, রানী চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রানীর কন্যা প্রিন্স আনে এবং ছোট ছেলে এডওয়ার্ড স্কটল্যান্ডেই রয়েছেন। প্রিন্স চার্লসের ছোট ছেলে হ্যারি স্ত্রীকে নিয়ে এখন আমেরিকায় থাকেন। তিনিও চলে আসছেন। ব্রিটেনের মন্ত্রিসভা জরুরি বৈঠকে বসেছে। গোটা দেশ শোকস্তব্ধ।
বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন এলিজাবেথ। রাজপরিবারের দায়িত্বভার থেকে অব্যাহতি দিতে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই তাঁকে বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যুবরাজ উইলিয়ামের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের বালমোরাল কাসলে রাখা হয় তাঁকে। সেখান থেকেই যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা করছিলেন তিনি। ব্রিটেনের প্রথা ভেঙে বাকিংহ্যাম প্যালেসের বাইরে থেকে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করা হয়। আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রিভি কাউন্সিলের বৈঠকও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৯৫৩ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটেনের রানি হিসাবে অভিষেক হয় দ্বিতীয় এলিজাবেথের। রাজপরিবারের সরাসরি উত্তরাধিকারী হওয়ার সূত্রেই তাঁর মাথায় উঠেছিল রানির মুকুট। ব্রিটেনের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার পাশাপাশি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল রানির সাজপোশাকও। মাঝে মাঝে রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কার্যকলাপের ফলে অস্বস্তিতে পড়তে হলেও দক্ষ হাতে রাজপরিবারের হাল ধরেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে ব্রিটেনে একটি যুগের অবসান হল।