মস্কো: কিভ (Kyiv) এবং ওয়াশিংটনের (Washington) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ক্রেমলিনের। তাদের বক্তব্য, রাশিয়া (Russia) ভীষণ উদ্বিগ্ন, কিন্তু কোনও কর্ণপাতই করা হচ্ছে না। আরও অভিযোগ, রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য ইউক্রেনকে (Ukraine) যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (United States)। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (President Vladimir Putin) ইউক্রেন যুদ্ধে দ্রুত ইতি টানতে চান। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এই অভিযোগ করেছে ক্রেমলিন।
ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসান প্রসঙ্গে পুতিন বলেছেন, “আমাদের লক্ষ্য হল… যুদ্ধে ইতি টানা। আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।” তিনি আরও বলেছেন, “আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি, যাতে সবকিছুতে ইতি টানা যায়, যত শীঘ্র হবে তত ভালো।” এরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “সমস্ত দ্বন্দ্বই কোনও না কোনওভাবে কথাবার্তার মাধ্যমে একদিন শেষ হয়। যত তাড়াতাড়ি আমাদের বিরোধীরা এটা বুঝবে, তত ভালো।”
আরও পড়ুন: Pakistan-Ukraine: ইউক্রেনকে অস্ত্র সাহায্য করতে পারে পাকিস্তান
মস্কোর সামরিক বাহিনীর (Military Chief) প্রধান জানিয়েছেন, রাশিয়ার বাহিনী এখন পূর্ব ডনেৎসক অঞ্চলে (Eastern Donetsk Region) নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাখমুট (Bakhmut) শহর এই অঞ্চলের অবস্থিত। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন চলছে, আর এই শহরই ইউক্রেন যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু (Epicenter) হয়ে উঠেছে। যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, রাশিয়ার অন্দরেও জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মস্কোর আধিকারিকরাও একাধিকবার বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি তাঁরা কোনওভাবেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
পুতিনের নেতৃত্বে মস্কো এখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনেস্কির (Volodymyr Zelenskyy) দিকে আঙুল তুলছে। কারণ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিনি কোনওভাবেই সমঝোতার পথে হাঁটবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে কূটনৈতিক আলোচনার রাস্তা রাশিয়া খোলা রাখলেও, ইউক্রেনই গোঁ ধরে বসে আছে এবিষয়ে, বিশ্বের সামনে এই যুক্তি খাড়া করছে ক্রেমলিন। সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি জোর গলায় বলে এসেছেন, তাঁর দেশ জীবিত আছে এবং লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোকে বৈশ্বিক নিরাপত্তার (Global Security) স্বার্থে এক বিনিয়োগ বলেও মন্তব্য করেছেন। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম (Patriot missile defence system) সহ ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক অস্ত্র সাহায্যের বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডো বাইডেন (US President Joe Biden)।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাহায্যের প্রতিশ্রুতির পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যারা আমাদের মোকাবিলা করছে, তারা বলছে এটা প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র। সবকিছুরই একটা প্রতিষেধক (Antidote) থাকে। যারা এটা করছে, তারা বৃথাই করছে সবকিছু। এটা শুধু এই দ্বন্দ্বকে দীর্ঘায়িত করছে। এছাড়া আর কিছু নয়।