নয়াদিল্লি: কংগ্রেসের সভাপতি (Congress President Election) নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হতে চলেছে। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) সঙ্গে পরামর্শ করেই জি ২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম মুখ শশী থারুর (Sashi Tharoor) সম্ভবত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিল করতে চলেছেন। গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট (Ashok Gehlot) প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও আগামী সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন। তাঁরা দুজনেই মনোনয়ন দিলে দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হবে।
কংগ্রেসে অবশ্য সভাপতি পদে লড়াই আগেও হয়েছে। ১৯৩৯ সালে সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেস সভাপতি হয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধীর প্রার্থী পট্টভি সীতারামাইয়াকে হারিয়ে। ১৯৫০ সালে নেহরুর প্রার্থী জে বি কৃপালনীকে হারিয়েছিলেন পুরষোত্তম দাস ট্যান্ডন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, জি ২৩ গোষ্ঠীর আর এক নেতা মণীশ তিওয়ারিও সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন সেক্ষেত্রে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সভাপতি পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের নজিরও রয়েছে। ১৯৯৭ সালে সীতারাম কেশরী, শরদ পাওয়ার এবং রাজেশ পাইলটের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। এখন প্রশ্ন হল, শশী কি নিজে থেকে লড়াইয়ে নামছেন, নাকি গান্ধী পরিবারের কৌশলগত চাল হিসেবে তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, শশী প্রার্থী হলে প্রচার করা যাবে যে, কংগ্রেসে সম্পূর্ণ গণতন্ত্র আছে। গেহলটের পরিচিতি গান্ধী পরিবারের খুব কাছের লোক হিসেবে। এখানে লড়াই হলে বলা যাবে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটে যে জিতেছেন, তিনিই সভাপতি হয়েছেন। তখন আর গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি সামনে আসবে না।
তবে অশোক গেহলট এখনও সম্পূর্ণ মনস্থির করে উঠতে পারেননি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ার ব্যাপারে। তিনি রাজস্থানে তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী শচিন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি ছেড়ে দিতে চান না। সূত্রের খবর, তিনি নাকি সোনিয়া, রাহুলকে জানিয়ে দিয়েছেন, একান্তই যদি তাঁকে সভাপতি হতে হয়, তখন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে আরও কিছুদিন থাকবেন। তা ছাড়া জাতীয় রাজনীতিতে চলে গেলেও নিজের রাজ্যে তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউকে বসাতে চান। তাঁর আরও প্রস্তাব, রাহুল যদি শেষ পর্যন্ত সভাপতি পদে না দাঁড়াতে চান, তাহলে সোনিয়া পূর্ণ সময়ের সভাপতি হবেন, আর তিনি কার্যকরী সভাপতি হবেন। একই সঙ্গে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদও সামলাবেন।
এর আগেও অশোক গেহলট একাধিকবার রাহুলকে সভাপতি হতে অনুরোধ করেছেন। আর রাহুল বরাবরই জানিয়ে দিচ্ছেন, তিনি সভাপতি হতে চান না। তবে গেহলট এখনও হাল ছাড়তে রাজি নন। শেষ পর্যন্ত রাজস্থানের গদি বাঁচানোর লক্ষ্যে তিনি রাহুলকে সভাপতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। ভারত জোড়ো যাত্রার ফাঁকে রাহুল একদিনের জন্য দিল্লি আসছেন। তিনি কে সি বেণুগোপালকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সভাপতি পদ নিয়ে কংগ্রেসে জট এখনও কাটেনি। ৩০ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আগামী দশদিনে আরও কত কী ঘটে, তা দেখার জন্য উদগ্রীব রাজনৈতিক মহল।