ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং তাণ্ডব চালাল বাংলাদেশের উপকূল লাগোয়া জেলাগুলিতে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে বাংলাদেশের ছয় জেলায় ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। সেখানকার উপকূলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার রাতে তিনকোনা ও সন্দীপ দ্বীপের মধ্যে আছড়ে পড়ে সিত্রাং। মঙ্গলবার সকালে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নোয়াখালি, ভোলা, বরিশাল ও কক্সবাজারসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উপকূলসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার উপকূলসহ দেশের ১৫টি উপকূলীয় জেলাতে বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
সারা দেশে এই পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সোমবার রাতে ভোলা সদর ও চরফ্যাশনের শশীভূষণে গাছ চাপা পড়ে দুজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া দৌলতখালে ঘর চাপা পড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।এদিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গাছ চাপা পড়ে একই পরিবারের তিনজনের প্রাণহানি হয়েছে। সিরাজগঞ্জে নৌকাডুবিতে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বরগুনা, শরিয়তপুর ও নড়াইলে মারা গিয়েছেন আরও তিনজন।
আরও পড়ুন Sitrang: রাতেই সিত্রাং আছড়ে পড়ল বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলে
সিত্রাংয়ের কারণে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এছাড়া সেদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মঙ্গলবারের সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকা অন্যান্য স্থান থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজারে ডুবেছে প্রধান সড়ক। চট্টগ্রামে কয়েকটি স্থানে তলিয়েছে জেলে পল্লি। নোয়াখালির হাতিয়ায় ২২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সড়ক ও নৌ যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ নেই বহু জায়গায়। আবহাওয়ার কারণে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে সোমবার বিকেল থেকে বিমান পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। উপকূলের ১৫টি জেলার নদীর জল স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতায় ফুঁসে উঠে প্লাবিত করেছে এলাকা।