ঝালদা পুরসভায় (Jhalda Municipality) রাজ্য সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয় আপাতত পুরুলিয়ার জেলাশাসক (District Magistrate) সামলাবেন প্রশাসকের দায়িত্ব। পুরপ্রশাসক বসানোর ব্যাপারে রাজ্যের সিদ্ধান্তের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের। স্থগিতাদেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। রাজ্য সরকার নির্বাচিত প্রশাসক নয়, পুরসভার দ্বায়িত্ব সামলাবেন জেলাশাসক। সোমবার এমনই নির্দেশ আদালতের। আগামী ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। পরবর্তী শুনানি ৩রা জানুয়ারি।
গত ২ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা যে নির্দেশিকায় প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ (Interim Stay Order) জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন বিচারপতি। তিনি জানান, নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন ধার্য করার দ্বায়িত্ব ভাইস চেয়ারম্যানের। সাত দিনের মধ্যে তার এই কাজ করার কথা।
একইসঙ্গে তিনি এই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন, ৩রা ডিসেম্বরের চেয়ারম্যান (Chairman) নির্বাচনের বিশেষ সভার আগেই রাজ্য প্রশাসক (Administrator) বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ভাইস চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পত্র গৃহীত হল কিনা সে বিষয়ে ২ রা ডিসেম্বরের নির্দেশিকায় কোন উল্লেখ নেই। পরবর্তী শুনানির আগে সব পক্ষের হলফনামা তলব করা হয়েছে।
ঝালদা পুরসভায় প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস (Congress)। এদিনের শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানতে চান, ভাইস-চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু কার কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন?
জবাবে সরকারি আইনজীবী জানান, তিনি পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু কার কাছে সেটা জানা নেই। বরং পাল্টা সওয়াল করে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, চেয়ারম্যান পদত্যাগ করলে ভাইস-চেয়ারম্যানকেই চেয়ারম্যান হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করতে হয়। সেক্ষেত্রে তিনিই চেয়ারম্যান। তিনি পদত্যাগপত্র দেবেন কাকে?
বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, ২৮ শে নভেম্বর পদত্যাগ করেন ভাইস চেয়ারম্যান। রাজ্য কিভাবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে হস্তক্ষেপ করে? তার উত্তরে সরকারি আইনজীবী জানান, সরকার দেখেছে যে শূন্যপদ রয়েছে, তাই হস্তক্ষেপ করেছে। প্রশাসক ইতিমধ্যেই দ্বায়িত্ব নিয়েছেন।
আর মামলাকারী কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, চেয়ারম্যান পদত্যাগ করলে ৭ দিনের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানকে বিশেষ সভা ডাকতে হয় নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য। তিনি না ডাকলে যে কোন ৩ জন কাউন্সিলর এই বিশেষ সভা ডাকতে পারেন। ২১ শে নভেম্বর আস্থা ভোটে চেয়ারম্যানকে অপসারণ করেন বিরোধীরা। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান পদক্ষেপ না করায়, ২৯ শে নভেম্বর তিন বিরোধী কাউন্সিলর চেয়ারম্যান নির্বাচনের সভা ডাকেন। ৩রা ডিসেম্বর ছিল চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন। তার আগেই প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান কংগ্রেস কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায়। সেই মামলায় সোমবার এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি। এদিনই রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস।