কলকাতা:কলকাতা হাইকোর্টর বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল, বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ৯ নভেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিতে হবে। নতুবা তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সময়সীমা পার হওয়ার আগেই সোমবার জলপাইগুড়ির বানারহাট উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা পদত্যাগ করলেন। অনেকটা আচম্বিতেই অনন্যা মহাপাত্র নামে ওই শিক্ষিকা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জয়িতা গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে ইস্তফাপত্র জমা দেন।
স্কুল সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে অনন্যা যোগ দেন। অনন্যা জানান, একটি মেয়াদ উত্তীর্ণ তালিকা থেকে তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র তিনি নন, আরও ১৮৪জন এরকম মেয়াদ উত্তীর্ণ তালিকা থেকে চাকরি পেয়েছেন। অনন্যা আচমকা এদিন ইস্তফা দেওয়ায় স্কুলের সকলে হতবাক। আগে কেউ টের পাননি যে, তিনি এদিন স্কুলে এসে ইস্তফা দেবেন।
সামনে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। তা ছাড়া স্কুলে শিক্ষিকার সংকটও রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জানান, স্কুলে শিক্ষিকার সমস্যা আছে। অনন্যা ছেড়ে দেওয়ায় অসুবিধা তো হবেই। তিনি অবিলম্বে শূন্য পদগুলি পূরণের দাবি জানিয়েছেন। অনন্যার এক আত্মীয় জানান, বিচারপতির নির্দেশ মেনেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন, পাছে আবার ঝামেলায় না পড়তে হয়। তাই আগেভাগেই অনন্যা চাকরি ছাড়লেন।
আরও পড়ুন Calcutta High Court: OMR সিট সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই রিপোর্ট গ্রহন করল না হাইকোর্ট
শিক্ষা দুর্নীতি সামনে আসতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। যাঁরা বেআইনিভাবে ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, এমন প্রায় ২৬৯জনের চাকরিও তিনি বাতিল করে দেন। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যান বিচারপতির নির্দেশের বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে আবেদনকারীদের বক্তব্য শুনতে বলেছে হাইকোর্টকে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আবেদন করলে তিনি প্রতিদিন বিকেল চারটে থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মামলা শুনবেন। তারও আগে তিনি হুমকি দেন, বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের ৯ নভেম্বরের মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই নির্দেশ মেনে এই প্রথম কোনও শিক্ষক ইস্তফা দিলেন।
