নয়াদিল্লি: অরুণাচলের (Arunachal Pradesh) তাওয়াংয়ে (Tawang) ভারত-চীন সেনা সংঘর্ষ (India-China Clash) নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতেও বাগযুদ্ধের আবহ। মঙ্গলবার সংসদে একযোগে বিরোধীরা সাঁড়াশি আক্রমণে চেপে ধরে সরকার পক্ষকে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের (Rajnath Singh) বিবৃতি সত্ত্বেও ধরে রাখা যায়নি বিরোধীদের। সংসদের বাইরে তা নিয়ে কংগ্রেসকে তুলোধনা করতে ছাড়েননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও (Amit Shah)। এদিন তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে, ততক্ষণ দেশের এক ইঞ্চি জমি কেউ দখল করতে পারবে না।
অমিত শাহের এই বক্তব্যই বিতর্কের ধোঁয়া আরও উসকে দিয়েছে। আর তার একমাত্র কারণ হল খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি পুরনো টুইট। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের ঠিক মুখেই অমিত শাহ একটি টুইটে লিখেছিলেন, ভারতের সীমান্ত কংগ্রেসের হাতে নিরাপদ নয়। ২৫ এপ্রিল, ২০১৪ সালের ওই টুইটে অমিতের দাবি ছিল, চীনা সেনাদের যখন ইচ্ছে হয়, তখনই তারা এপারে আসে। আমাদের জমিতে পিকনিক করে এবং আমাদের সরকার কিছু করতে পারে না। তার দুদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে শাহ বলেছিলেন, মোদি যদি প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্ত পেরতে ভয়ে কাঁপবে। শুধু ভারতীয় সেনাবাহিনীই নয়, এই আমলে (কংগ্রেস) দেশের সীমান্তও নিরাপদ নয়।
আরও পড়ুন: Exports: কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যর রফতানিতে সাফল্যের খতিয়ান পেশ কেন্দ্রের
স্বাভাবিকভাবেই অমিত শাহের দাবি নিয়ে কটাক্ষের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কারণ, মোদি সরকার দিল্লির মসনদে বসার পর ২০২০ সালের জুনে গালওয়ান এবং গত ৯ ডিসেম্বর অরুণাচলের তাওয়াংয়ে চীনা সেনা অনুপ্রবেশ ঘটে। এছাড়াও বারবার চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অশান্তি দানা পাকিয়েছে। এখনও চীনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে কোনও ফলপ্রসূ সমাধানসূত্র বেরয়নি। উপরন্তু, পিপলস লিবারেশন আর্মি বা লালফৌজ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে সেনা মোতায়েন, অত্যাধুনিক ঘাঁটি এবং সমরাস্ত্র মজুত করে রাখা সত্ত্বেও দিল্লির তরফে জোরাল প্রতিবাদ জানানো হয়নি।
ফলত অমিত শাহের সেদিনের দাবি আজকের দিনে ফাঁকা বেলুনের মতো শোনাচ্ছে। যদিও আজ শাহ কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন। কংগ্রেসের চীন-প্রীতির কথা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ ভারত আত্মত্যাগ করেছে চীনের প্রতি নেহরুর ভালোবাসার কারণে।