বাদাউন: ইঁদুরের লেজ বেঁধে ড্রেনে ডুবিয়ে মারার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের বাদাউনের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩০ পৃষ্ঠার চার্জশিট (Charge sheet) পেশ করেছে ইউপি পুলিশ।
পশু অধিকার কর্মী (Animal Rights Activits) বিকেন্দ্র শর্মা ঘটনাটি জানতে পেরে ইঁদুরটিকে (Rat) বাঁচানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ইঁদুরটি শ্বাসরোধে মারা যায়। এই ঘটনায় শর্মা ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি মনোজ কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও পরে স্থানীয় আদালতে তাকে আগাম জামিন দেওয়া হয়।
পুলিশ ইঁদুরের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারেলির ইন্ডিয়ান ভেটেরিনারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (IVRI) পাঠায়। রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ফুসফুস ফুলে ও শ্বাসরোধের কারণে ইঁদুরটির মৃত্যু হয়েছে।
এরপর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও,পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞদের মতামত সহ ৩০ পৃষ্ঠার একটি চার্জশিট তৈরি করেছে পুলিশ।
সার্কেল অফিসার (CO) অলোক মিশ্র বলেন, ইনভেস্টিগেশন অফিসার রাজেশ যাদবের চার্জসিটে ইঁদুরটিকে মারার যে ভিডিও পাওয়া গিয়েছে সেই প্রমাণের ভিত্তিতে মনোজ কুমারকে ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ধারা ১১ (১) (প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস অ্যাক্ট) এবং ধারা ৪২৯ (প্রাণী হত্যা বা পঙ্গু করা) এর অধীনে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Earthquake | ভোররাতে কেঁপে উঠলো পড়শী রাজ্য, ভূমিকম্পে আতঙ্ক শিলিগুড়ি
বাদাউন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) অশোক কুমার সিং বলেছেন, যে ইঁদুর মারা বন বিভাগ আইনে অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয় না। তবে প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুর আচারণের প্রতিরোধে একটি আইন রয়েছে, যার অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তাই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
শাস্তি কী?
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইনের অধীনে নথিভুক্ত মামলাগুলিতে ১০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। ৪২৯ ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা দুটির কথায় উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে মনোজের বাবা মথুরা প্রসাদ বলেন, ‘ইঁদুর বা কাক মেরে ফেলা তো অন্যায় নয়। এরা ক্ষতিকর প্রাণী। আমার ছেলের যদি এমন ঘটনায় শাস্তি হয়, তাহলে যারা মুরগি, ছাগল মেরেছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যারা ইঁদুর মারার ওষুধ বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
মনোজ কুমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী ভিকেন্দ্র শর্মা বলেছেন, ইঁদুরটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার জন্য এফআইআর দায়ের করা হয়। প্রাণী জবাই করার আগে প্রথমে তার শিরা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর প্রাণীটি তার চেতনা হারিয়ে ধীরে ধীরে মারা যায়। তারপর সেই প্রাণীটিকে টুকরো টুকরো করা হয়। এর জন্য আলাদা আইন রয়েছে, এবং এটি বৈধ পক্রিয়া।