শান্তিনিকেতন: রবীন্দ্রভূমেই এবার কাটছাঁট করা হল রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান। ২৫ বৈশাখ উপলক্ষে প্রতি বছরই বিশ্বভারতীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা হয়। কিন্তু এবার মূল দুটি অনুষ্ঠান বাতিল করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ৪ মে জানানো হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথের জন্মদিবসে দিনভর বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। সকাল ৯ টায় পাঠভবনের মাধবী বিতানে ‘জন্মোৎসব পালন’ ও সন্ধে ৭টায় গৌরপ্রাঙ্গণে বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রীদের রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘শাপমোচন’ পরিবেশিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রবীন্দ্র জয়ন্তীর ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে ‘বিশ্বভারতী কর্মিপরিষদ’ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, ওই দুটি অনুষ্ঠান হবে না। শুধুমাত্র সকালে বাকি চারটি অনুষ্ঠান- বৈতালিক, কবিকণ্ঠ, মন্দির এবং পুষ্প প্রদান অনুষ্ঠান হবে। অর্থাৎ, আশ্রম প্রাঙ্গণে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে নমঃ নমঃ করে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা স্পষ্ট। জানা গিয়েছে, গত তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র ভবনের দরজা। আর ২৫ বৈশাখেও তা খুলছে না।
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অবশ্য় একটাই যুক্তি দেখাচ্ছে। গরমের জন্যই নাকি অনুষ্ঠানে কাটছাঁট করা হয়েছে। এই নিয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অধ্যাপিকা মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাপমাত্রা বাড়ছে। পড়ুয়ারা যাতে গরমের কারণে অসুস্থ না হয়ে পড়ে, তার জন্য মূল দুটি অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু শান্তিনিকেতনের একটা বড় অংশের ধারণা, অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্কের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত। শনিবার থেকে নোবেলজয়ীর বাসভবন ‘প্রতীচী’র পাশে ধর্না অব্যাহত রেখেছে বিশ্বভারতী বাঁচাও কমিটি। ২৫ বৈশাখেও তা চলবে। তাই অস্বস্তি ঢাকতে অনুষ্ঠান কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।
আর এই সিদ্ধান্তে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সোচ্চার হয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে বিভিন্ন সংগঠনও। উল্লেখ্য, এর আগে পৌষ মেলা, বসন্ত উৎসব বন্ধ করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আর এবার রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠানেও কাটছাঁট করা হল।