কলকাতা: কয়েকদিন ধরে তীব্র দহন জ্বালায় জ্বলছে বাংলা। চলতি বছরে বঙ্গে বর্ষার প্রবেশ দেরিতে তা জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সপ্তাহ জুড়ে দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে। রেহাই নেই উত্তরবঙ্গেরও। মালদহ, উত্তর, দক্ষিণ দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের (Heatwave) সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। কলকাতা (Kolkata), উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা (North and South 24 Parganas) এবং পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের (South Bengal) সব জেলাতেই তাপপ্রবাহ চলবে।
কলকাতা সহ উপকূলের জেলাগুলিতে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। পশ্চিমের জেলাতে শুষ্ক আবহাওয়া বজায় থাকবে। এমনকি লু-এর মতো পরিস্থিতি থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বাড়বে। শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা থাকবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া এবং হুগলিতে। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চরমে উঠবে এই জেলাগুলিতে।
কলকাতায় চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় থকবে। তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে । বেলা যত বাড়বে গরম ও অস্বস্তি বাড়বে। বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চরমে। বুধবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ ডিগ্রি বেশি। হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে।উত্তর-পশ্চিম ভারতে আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে৷
আগামী কয়েক দিন খুব হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকায়। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং , কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি এই পাঁচ জেলাতে শনিবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস। উত্তরবঙ্গের মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা থাকবে। জলপাইগুড়ি কোচবিহার, শিলিগুড়ি বাগডোগরাতেও আলিপুরদুয়ার এর কিছু অংশে তাপপ্রবাহের মত পরিস্থিতি।
এখন সবার মনেই একটা প্রশ্ন এই তাপপ্রবাহের থেকে কবে মুক্তি মিলবে। কবে রাজ্য আসবে বর্ষা সেই অপেক্ষায় চাতকের মতো তাকিয়ে বঙ্গবাসী। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘বিপর্যয়’। সে কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। আবহবিদদের আশঙ্কা, বর্ষার উপরে কুপ্রভাব ফেলবে ওই ঝড়। বাংলায় বর্ষার পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে মায়ানমারের উপকূলে থাকা একটি ঘূর্ণাবর্ত। আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় বা মায়ানমারের ঘূর্ণাবর্ত পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে বৃষ্টির অনুকূল কোনও পরিস্থিতি তৈরি করতে পারবে না। তাই শনিবার পর্যন্ত বঙ্গে এই দহন-পরিস্থিতি চলবে। তবে শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সে বৃষ্টি বাড়তে পারে।