করোনা’র সংক্রমণ ঠেকাতে জারি করা হয়েছে বেশ কিছু বিধি নিষেধ। যার জেরে স্তব্ধ স্বাভাবিক জনজীবন। সমস্যায় অসংখ্য সাধারণ মানুষ। আরও অনেকের মতো এই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে দিশেহারা সোনামুখীর প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পন্ন তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনও। লালমাটির দেশ বাঁকুড়ার সোনামুখীতে উৎপাদিত তাঁত শিল্প শুধুমাত্র এরাজ্যে নয়, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও মুখ উজ্জ্বল করেছে। কিন্তু যে শিল্পীদের হাতে তৈরি তাঁত বিশ্বের দরবারে সমাদৃত আজ সেই শিল্পীরাই বড় অসহায়। বর্তমানে সোনামুখী শহরে প্রায় ১২০০ তাঁত শিল্পী রয়েছেন। এই কাজে পরোক্ষভাবে যুক্ত মানুষের সংখ্যাটা আরও বেশী। কিন্তু সারা বছর যারা এই শিল্পের ওপর নির্ভর করেই দিনযাপন করেন, করোনার উপস্থিতিতে তারাই আজ ভালো নেই । এখানে মূলতঃ সিল্ক শাড়ি, থ্রিডি-ফোরডি, অভিনন্দন সহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি তৈরি হয়। বর্তমানে সরকারি বিশেষ বিধিনিষেধের গেরোয় পড়ে বিক্রি কমেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে কমেছে তাঁদের কাজের পরিমাণ। একদিকে এখানকার শিল্পীরা যেমন উৎপাদিত শাড়ি রফতানি করতে পারছেন না যার ফলে মহাজনের ঋণও শোধ হচ্ছে না। অন্যদিকে বাইরে থেকে আমদানি হচ্ছে না কাঁচামালও। এর মধ্যেও যতটুকু কাজ মিলছে সেই অনুপাতে পাচ্ছেন না মজুরি। মহাজনরা কাপড় বিক্রি করতে না পারলে কোথা থেকেই বা তাঁদের মজুরি দেবেন। এই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে কঠিন আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছেন সোনামুখীর তাঁত শিল্পীরা। এই অবস্থায় তাঁরা তাকিয়ে রয়েছেন সরকারি আর্থিক সহযোগিতার দিকে। সরকার যদি একটু আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে তাহলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে আগামী দিনগুলি ভালোভাবে কাটবে বলে জানান তাঁরা। তাঁত শিল্পী সুনীল সিংহ, জয়দেব হেঁশ বলেন, এই পেশার ওপরে নির্ভর করেই আমাদের সারা বছরের সংসার চলে। কিন্তু বর্তমানে কাজের পরিমাণ অনেকটাই কমেছে। আগে তিনশো টাকা মজুরি পেতাম এখন তা একশো থেকে দেড়শো টাকাতে নেমে গিয়েছে। ফলে আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। সরকারিভাবে কোনরকম সহযোগিতা মিলছে না।’
Html code here! Replace this with any non empty text and that's it.