নয়াদিল্লি: পিতল বা মাটির কলসি, কুঁজো উধাও। বিলুপ্তপ্রায় ঘটি, কাঁসার গ্লাস। বাড়িতে অতিথি এলে বের করা হয় কাচের গ্লাস। নচেৎ প্লাস্টিকের বোতল থেকেই জল খাওয়া অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। আর বাড়ির বাইরে বেরলে তো ব্যাগে এক বোতল জল, না হলে চটজলদি কিনে নেওয়া যেতে পারে নামী কোম্পানির ‘বিশুদ্ধ’ জলের বোতল।
কিন্তু, তা কতখানি বিশুদ্ধ জানেন কী? এও কী জানেন যে, দিনপ্রতি প্লাস্টিকের বোতলের এক লিটার জল খেয়ে আপনার শরীরে ঢুকছে ২ লক্ষ ৪০ হাজার প্ল্যাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা। যা আপনার-আমার শরীরের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন: শিশুপুত্রকে খুন করা সূচনা কলকাতারই মেয়ে
সম্প্রতি এক গবেষণায় ধরা পড়েছে এক লিটার জলের বোতলে থাকে অত্যন্ত সূক্ষ্ম প্লাস্টিকের কণা। এর আগের একটি গবেষণালব্ধ তথ্যের প্রায় ১০ থেকে ১০০ গুণ অতিরিক্ত। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক এক মাইক্রোমিটারের মতো ক্ষুদ্র কণা। কিন্তু ন্যানোপ্ল্যাস্টিক হল এক মাইক্রোমিটারের চেয়েও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা।
আমেরিকায় বিক্রিত শীর্ষ ও স্বীকৃত কিছু ব্রান্ডেড কোম্পানির বোতলের জল পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতি বোতলে ১০০ ন্যানোমিটার প্লাস্টিক কণা থাকে। আর প্রতি লিটার জলে ১ লক্ষ ১০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার ন্যানোমিটার প্লাস্টিক কণা থাকে। এতেও নিশ্চিন্দি নেই, বাকি আরও থাকে যা এর চেয়ে বড় মাপের, মাইক্রোপ্ল্যাস্টিক। ২ লক্ষ ৪০ হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিকের ৯০ শতাংশ হল ন্যানোপ্ল্যাস্টিক।
ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি ছাপা হয়েছে। কলম্বিয়া ক্লাইমেট স্কুলের এনভারয়রনমেন্টাল কেমিস্ট বাইজান ইয়ান বলেন, আগে আমরা এটাকে গুরুত্ব দিতাম না। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বোতলের জল বিষাক্ত। বাস্তবেই তা প্রমাণিত।
সাম্প্রতিক অন্যান্য সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, আমাদের পরিবেশের সর্বত্র চোখের আড়ালে রয়েছে প্লাস্টিক-শত্রু। তা সে ভূমি থেকে জল কিংবা মেরুপ্রদেশের তুষার, যেখানেই হোক না কেন। একটি বড় প্লাস্টিক দ্রব্য ধীরে ধীরে খণ্ড হতে হতে ক্ষুদ্রাণুর মতো যাওয়ার পর তা সহজেই আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।
অন্য খবর দেখুন