২০২০ এবং ২০২১ সাল কোভিড আতঙ্কে কাটাতে হয়েছে গোটা বিশ্বসহ ভারতবাসীকে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ প্রায় শেষের পথে। বছর শেষ হতে চলা মানেই শীত। আর শীতকালে শ্বাসকষ্টজনিত অসুখে মানুষ ভোগেন। কোভিডের আশঙ্কাও তাই বেড়ে যায়। বিশেষ করে করোনার উপসর্গ প্রথম প্রথম অনেকটা সাধারণ ফ্লু’র মতোই হয়। তাই দরকার আগাম সতর্কতা। এদিকে কোভিডের প্রকোপ কমলেও, একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলেছে, কোভিড মহামারী এবার আয়ত্তে আসতে শুরু করেছে। ঠিক মতো পদক্ষেপ নিয়ে এগোলে, পৃথিবী থেকে চিরতরে নির্মূল করা যেতে পারে।
ভারতের একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যেই কোভিডের নতুন সাব-ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে। ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়ান্ট এক্সবিবি (XBB) হল দু’টি ওমিক্রন BA.2 সাব-ভ্যারিয়ান্ট (BA.2.10.1 এবং BA.2.75)-এর সংমিশ্রণ (Recombination)। করোনা ভাইরাসের পৃষ্ঠে যে বিবর্তন (Mutation) হয়, তার ফলে যে অ্যান্টিবডি ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে আক্রমণ করে, তাকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। করোনা ভারাস এইভাবে দিনে দিনে বিবর্তন ঘটাচ্ছে, যার ফলে দেখা দিচ্ছে সাব-ভ্যারিয়ান্ট। এই মুহূর্তে করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়ান্টের মধ্যে সারা বিশ্বে ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টের দাপট ৯৮ শতাংশেরও বেশি।
আরও পড়ুন: Easy soup recipes: সপ্তাহান্তে সুপের বাটিতে দিন সুখের চুমুক
উদ্বেগের বিষয় কী?
গত ২৬ অক্টোবর হু তাদের সর্বশেষ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত রিপোর্টে জানিয়েছে, ৩৯০টি ওমিক্রন-বংশ জাত (Omicron-descendent lineages) এবং ৪৮টি সংমিশ্রণ (recombinants) রয়েছে পৃথিবীতে। ৩৫টি দেশে XBB ও XBB.1-এর ১৪৫৩টি জিনোম সিক্যোয়েন্সের সন্ধান মিলেছে। সেই তালিকায় ভারতও রয়েছে। অন্যান্য ভাইরাসের মতো সার্স-কোভি২ (SARS-CoV2) ভাইরাসও মিউটেট হয়। এর মধ্যে XBB ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধক। তবে এটাও ঠিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, কিন্তু উপসর্গ মৃদু। গুরুতর অসুস্থ হওয়ার তেমন কোনও খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু সেরে ওঠার পর আশঙ্কা থাকছে লং কোভিডের।
সতর্কতা এবং ভ্যাকসিন
কোভিড ভ্যাকসিন আসার পর থেকে করোনা অনেকটাই আয়ত্তে এলেও, এখনও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। এনিয়ে এখনও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাথমিক প্রমাণ বলছে, কোভিড ভ্যাকসিন গুরুতর অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে সতর্কতা নেওয়া জরুরি। ভিড়ে ঠাসা স্থান যেমন এড়িয়ে চলতে হবে, তেমনই মাস্ক ব্যবহার এখনও জরুরি। অসুস্থ হলে বাড়িতেই থাকুন। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সঠিক চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন।