কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পান না প্রায় ৯৭ কোটি ভারতীয়। মানে, ১৩০ কোটির ‘গর্বিত’ ভারতবাসীর মধ্যে ৯৭ কোটি মানুষেরই দু’বেলা জীবনধারণের উপযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার জোটে না। শুধু তাই নয়, দেশে ও বিশ্বমঞ্চে বারফাট্টাই ভাষণ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারত অনাহার-অপুষ্টির এই তালিকায় আফ্রিকার খুব কাছাকাছিই আছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
স্বাস্থ্যকর বা সুষম খাদ্য কেনার ক্ষমতার উপর আন্তঃদেশীয় একটি তুলনামূলক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতের ৭১ শতাংশ মানুষের পুষ্টিকর খাদ্য কেনার ক্ষমতা নেই। সংখ্যায় যার পরিমাণ প্রায় ৯৭ কোটি। আরও লজ্জার বিষয় এই যে, ৫৬ ইঞ্চির বুকের ছাতিওয়ালা ভারতেরই পিছনে রয়েছে আফ্রিকা। যেখানে ৮০ শতাংশ মানুষের পুষ্টিকর খাবার জোটে না। গোটা এশিয়ায় ৪৩.৫ শতাংশ মানুষ এই আওতায় পড়েন। সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে, একা ভারতই কীভাবে অপুষ্টি, অনাহার, অর্ধাহার ও সুষম খাদ্যাভাবের দৌড়ে এশিয়ার মুখ উজ্জ্বল করে রয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যই বলছে, ২০২০ সালে বিশ্বের প্রায় ৩০৭ কোটি মানুষ ভালোভাবে খেতে পাননি। সেখানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ভারতেই তিন ভাগের একভাগ মানুষের বাস। ‘দি স্টেট অফ ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২২’ নামে রিপোর্টটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। ফাওয়ের তথ্যে আরও বলা হয়েছে, একজন মানুষের সারাদিনে সুষম খাবার খেতে যা খরচ হওয়ার কথা, তাতে ভারতে ৪ জনের পরিবারে মাসে ৭৬০০ টাকা লাগে। অর্থাৎ ভারতের ৯৭ কোটি মানুষই এই পরিমাণ ক্রয়ক্ষমতার নীচে বসবাস করেন।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আরও বাড়বে, ২০২৩ সালে ফের প্রবল মন্দার দিকে এগোচ্ছে বিশ্ব
এই তালিকায় দেখা যাচ্ছে, চীনের ১২ শতাংশ, ব্রাজিলে ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৯ শতাংশ, নেপালের ৮৪ শতাংশ, বাংলাদেশে ৭৩.৫ এবং পাকিস্তানের ৮৩.৫ শতাংশ মানুষ সুষম আহার পান না। ভারতের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষই ভরতুকির খাবার বা সরকারি রেশনের উপরে নির্ভরশীল। অর্থাৎ, সরকার পোষিত খাবার না পেলে, তাঁদের দুর্দশা কী হবে, তা নিয়েও যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।