Wednesday, June 11, 2025
HomeদেশJoshimath Crisis National Disaster: জোশিমঠের সংকটকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার আর্জি সুপ্রিম কোর্টে

Joshimath Crisis National Disaster: জোশিমঠের সংকটকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার আর্জি সুপ্রিম কোর্টে

Follow Us :

নয়াদিল্লি ও দেরাদুন: জোশিমঠ। বদ্রীনাথ এবং হেমকুণ্ডের মতো তীর্থস্থানে যাওয়ার সদর দরজা। আন্তর্জাতিক স্কি খেলোয়াড়দের আদর্শ স্থান আউলি আজ ভূমিক্ষয়ে ধ্বংসের পথে। উত্তরাখণ্ডের এই ছোট্ট শহরে একের পর এক বাড়ি-গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আজ ধসে পড়ার মতো অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। তাই জোশিমঠের এই সংকটকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণার আর্জি জমা পড়ল সুপ্রিম কোর্টে।

আবেদনে বলা হয়েছে, আজকের এই বিপর্যয়ের কারণ হচ্ছে, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ন ও নির্মাণকাজ। স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী এই আবেদন করে বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে অবিলম্বে আর্থিক সাহায্য ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, আবেদনে তিনি বলেছেন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে জোশিমঠের মানুষের জন্য উদ্ধারকাজে নামাতে হবে।

আরও পড়ুন: Joshimath Sinking: জোশিমঠের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলার সুপারিশ বিশেষজ্ঞ কমিটির

আর্জিতে বলা হয়েছে, মানুষের জীবন ও সম্পত্তিকে বলি দিয়ে কোনও উন্নয়নের প্রয়োজনের নেই। পরিবেশ ভারসাম্যকে ধ্বংস করে এমন কোনও কাজ ঘটে থাকলে তা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রাজ্য ও কেন্দ্রকে একযোগে ঠেকানো উচিত ছিল।

উত্তরাখণ্ডের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান জোশিমঠের আজকের এই দুর্দশা নতুন নয়। আজ প্রকৃতির ধ্বংসলীলা দেখে গত ৫ জানুয়ারি হুঁশ ফিরেছে সরকারের। সেদিন থেকে এই শহরে কোনও নির্মাণকাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, জোশিমঠের আজকের এই বিপর্যয়ের নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘ এক ইতিহাস।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিক্ষয় একদিনে হয়নি, অন্তত ১০ বছর ধরে ভূগর্ভস্থ জল কমে আসায় এই ঘটনা ঘটছে। অথচ, কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। গত ১০ বছরের মধ্যে একের পর এক বহুতল গড়ে উঠেছে। অনিয়ন্ত্রিত হোটেল ব্যবসা এমনভাবে ডানা মেলেছে, যা সরকার ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও জোশিমঠের আশপাশ এলাকায় যেমন জোশিমঠ, তপোবন এবং বিষ্ণুগড় এলাকায় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলাকেও ভূমিক্ষয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: Joshimath: জোশিমঠে ভূমিধসে ক্ষতি চীন সীমান্ত সড়কও, বিপদের মুখে দেশের নিরাপত্তা

জোশিমঠের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য হল, এটা খুব ঢালু এলাকা। এ ধরনের মাটিতে সোজা বাড়ি দাঁড় করানোর জন্য একদিকের মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছিল। এছাড়া ধসপ্রবণ জমিতেও একের পর এক বাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানে বড় বড় দেওয়াল গড়ে ভূমিধস ঠেকানোর চেষ্টা করলেও তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে।

সীমান্ত সড়ক সংস্থা বা বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের হেলাং বাইপাস তৈরিও এই ধসের অন্যতম কারণ। এই বাইপাস নির্মাণে বদ্রীনাথ সফরে প্রায় ৩০ কিমি যাত্রাপথ কমলেও ক্ষতি হচ্ছে প্রকৃতির। ১৯৭৬ সালে গঠিত মিশ্র কমিশনের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, তখনই এখানে পাকা ও বড় বাড়ি তৈরি বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। তারপর বছরের পর বছর কেটে গিয়েছে, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সাম্প্রতিক উপগ্রহ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পাহাড়ি ঝরনাগুলি তাদের গতিপথ পরিবর্তন করেছে। তাছাড়াও নদীগুলির শাখা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলেও এলাকার ধাপ কেটে নীচের দিকে নেমে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, জোশিমঠে কোনও স্যুয়েজ বা বর্জ্য জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। তার ফলে পাহাড়ের ধার বেয়ে জল চুঁইয়ে নামায় তা ভূমিধসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, আজ জোশিমঠকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়ার পিছনে হাত রয়েছে উন্নয়নের গতি, দৈত্যাকৃতির নগরায়ন, সর্বোপরি মানুষের নিজের হাতে তৈরি করা বিপর্যয়ের পথ। 

RELATED ARTICLES

Most Popular