নয়াদিল্লি: সরকারি নীতি, পদক্ষেপ এবং নির্দেশের সমালোচনা করাটা কোনও বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হতে পারে না। দেশের প্রধান বিচারপতি (CJI) ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম (Supreme Court collegium) এই ভাষাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করল। আইনজীবী সোমশেখর সুন্দরেসনকে বোম্বে হাইকোর্টের (Bombay High Court) বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ সরকার বাতিল করে দিলেও সর্বোচ্চ আদালত ফের একবার তাঁর নামই সুপারিশ করে একথা জানিয়েছে।
বিচারপতি এস কে কৌল এবং কে এম জোসেফ সহ তিন সদস্যের কলেজিয়াম কেন্দ্রের আপত্তি নাকচ করে দিয়েছে। কেন্দ্র বিচারপতি হিসেবে তাঁর নাম বাতিল করতে গিয়ে বলেছে, সোমশেখর নিজের মতে অত্যন্ত জেদি প্রকৃতির। তাছাড়াও তিনি নির্দিষ্টভাবে বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নীতি, পদক্ষেপ এবং নির্দেশের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচকের ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন: Ashok Gehlot: দলেই করোনা ঢুকে পড়েছে, কাকে বললেন অশোক গেহলট
এর জবাবে সোমশেখরের নাম ফের সুপারিশ করে কলেজিয়াম বলেছে, সামাজিক মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির মতামত নিতান্তই ব্যক্তিগত। তাতে করে তিনি কার্যক্ষেত্রে পক্ষাবলম্বন করবেন এটা প্রমাণ হয় না। বিচারপতি পদপ্রার্থী ওই ব্যক্তি যে আদর্শগতভাবে কোনও রাজনৈতিক ধ্যানধারণার পক্ষে তারও কোনও প্রমাণ নেই। কলেজিয়াম স্পষ্ট ভাষায় কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে, দেশের সব নাগরিকের অবাধ বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা (Right to Free Speech and Expression) রয়েছে। কোনও ব্যক্তির মতপ্রকাশের কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রাখা যায় না। তাঁর অযোগ্যতা বলেও বিবেচিত হতে পারে না। যাঁকে বিচারপতি পদে সুপারিশ করা হয়েছে, তিনি যোগ্য, মেধাবী।
কলেজিয়াম বলেছে, সোমশেখর বাণিজ্য আইনে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী। বোম্বে হাইকোর্টের পক্ষে তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ হবেন। কারণ বোম্বে হাইকোর্টে সারা বছর বাণিজ্য ও সিকিউরিটিজ আইনের মামলা লেগেই থাকে। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সুপারিশ অনুযায়ী বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে যে যে বিষয়গুলি বিবেচিত হয়ে থাকে, তার সবকটি গুণ রয়েছে সুন্দরেসনের।
একইসঙ্গে কলেজিয়াম দ্বিতীয়বারের জন্য আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও সুপারিশ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ইউ সি বন্দ্যোপাধ্যায়েরর পুত্র অমিতেশকে কেন্দ্রের নাকচ করার কারণ হল, তিনি গোধরা ট্রেন অগ্নিকাণ্ডে বিতর্কিত রিপোর্ট দিয়েছিলেন। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যন্তরীণ কারণে ট্রেনে আগুন লেগেছিল বলে রিপোর্ট দিয়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব আইনজীবী অমিতেশের নেতৃত্বাধীন ব্যানার্জি কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।