ভুবনেশ্বর: ২৮৮ নয়, মৃতের সংখ্যা ২৭৫! রবিবার এমনটাই অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়ে জানাল ওডিশা সরকার। ওড়িশার মুখ্যসচিব (Odisha Chief Secretary) প্রদীপ জেনা (Pradeep Jena) জানান, মৃতের সংখ্যা আদতে ২৭৫। তিনি বলেন, জেলাশাসক নিশ্চিত করেছেন যে কিছু মৃতদেহ দু’বার গোণা হয়েছে। তাই মোট মৃতের সংখ্যা সংশোধন করা হয়েছে। এখনও ১৮৭ জনের দেহ শনাক্ত করা যায়নি এবং তাদের পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এই আবহে মৃতদেহগুলি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বালাসোর থেকে। জানা গিয়েছে, এই মৃতদেহগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভুবনেশ্বরে। সেখানকার বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষণ করে রাখা হবে এই দেহগুলিকে।
শনিবার রেল যে বিবৃতি দিয়েছিল, তাতে দেখা গিয়েছিল বালেশ্বর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৮৮ জনের। আহত ৮০৩ জন। ওড়িশা সরকারের নতুন পরিসংখ্যান নিয়ে ভারতীয় রেলের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এদিকে, দুর্ঘটনার জেরে আহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে হাজারেও বেশি। গুরুতর ভাবে আহতের সংখ্যা ৫০-এর ওপরে। ওডিশার একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁদের। কারও কারও অবস্থা আবার আশঙ্কাজনক। এই আবহে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এদিকে এই ঘটনার জেরে ব্যাহত হয়েছে রেল পরিষেবা। বাতিল হচ্ছে একের পর এক ট্রেন। জও কমপক্ষে ১৬টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এই ট্রেন বাতিলের জেরে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। যাত্রীদের এই সমস্যা দূর করার জন্য বিশেষ ঘোষণা করলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক (Naveen Patnaik)।
আরও পড়ুন:Railway Safety Needed | শুধু আধুনিকতা নয়, গুরুত্ব দেওয়া উচিত নিরাপত্তায়
ওড়িশার তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের তরফে জানানো হয়, শুক্রবারের দুর্ঘটনার জেরে বালেশ্বর রুটে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যাত্রী সাধারণের সমস্যার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক পুরী, কটক ও ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতা অবধি বিনামূল্যে বাস পরিষেবা চালু করার ঘোষণা করেছেন। আজ থেকেই এই বাস পরিষেবা চালু হচ্ছে। যতদিন অবধি বালেশ্বর রুটে রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে না, ততদিন অবধি এই বাস পরিষেবা চালু থাকবে। যে যাত্রীরা ইতিমধ্যে টিকিট কিনেছেন তাঁরা যাত্রা শুরু করার আগে বাস স্ট্যান্ডে টাকা ফেরত পেতে পারেন। যেকোনও প্রশ্ন বা সাহায্যের জন্য, যাত্রীরা প্রদত্ত বাস অ্যাসোসিয়েশন হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রয়োজনে তাঁরা ভুবনেশ্বর, পুরী এবং কটকের আরটিও-র সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
এদিন সকালেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন। নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানান। পাশাপাশি গুরুতর আহত হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে সিগন্যাল ব্যবস্থায় বড়সড় ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ট্রেনটি বেলাইন হয়ে পিছন থেকে ধাক্কা মারে বাহানগা বাজার স্টেশনের লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িকে। একই সঙ্গে বেলাইন হওয়া করমণ্ডলের কয়েকটি কামরা গিয়ে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের সঙ্গে পাশাপাশি সংঘর্ষ হয়।