লন্ডন: ব্রিটিশ আদালতে (UK Court) জরিমানা দেওয়ার মতো টাকা নেই তাঁর কাছে। ধার-দেনা করে কোনওমতে চলছে, এমনই দাবি করলেন ভারত থেকে পলাতক হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদি(Nirav Modi)। ব্রিটিশ আদালতে তিনি জানিয়েছেন, আমি নিঃস্ব। মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে ধার করে কোনও মতে চালাচ্ছি।
ধনকুবের নীরব মোদি গত বছর পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক(PNB) ঋণ কেলেঙ্কারিতে ভারতের কাছে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ে হেরে যান। তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে নিরব মোদি দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থের কারাগারে রয়েছেন। তাঁর এই মামলা এখনও বিচারাধীন। ৫২ বছরের নীরব মোদি বৃহস্পতিবার পূর্ব লন্ডনের বার্কিংসাইড ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁর প্রত্যর্পণের আপিল সম্পর্কিত খরচের জন্য লন্ডনের হাইকোর্টের নির্দেশে ১,৫০,২৪৭ পাউন্ড আইনি খরচ বা জরিমানা দেন।
আরও পড়ুন: SSC Group C | গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি খোয়ালেন হুগলি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য
রিপোর্ট অনুযায়ী, নিরব মোদির দাবি, তাঁর কাছে আর কোনও টাকা নেই। ভারত সরকার তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। নিজের মামলা লড়তে তাঁর ১,৫০,০০০ পাউন্ড, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ধার নিতে হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারিতেই ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের জেলা জজ নীরব মোদিকে ভারতে প্রত্যার্পণের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু সে আদেশের বিরুদ্ধে লন্ডন হাইকোর্টে আবেদন জানান মোদি। মূলত তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাঁর আবেদন গ্রাহ্য করা হোক এমনই আর্জি জানানো হয়েছিল দেশ ছেড়ে পালানো ওই ব্যবসায়ীর তরফে। ভারতের জেলের মান এবং বিচারব্যবস্থার উপর অনাস্থা দেখিয়ে ব্রিটেনের হাইকোর্টে পাল্টা আবেদন জানিয়েছিলেন নীরব। তাঁর দাবি ছিল, ভারতে ফিরলে তিনি উপযুক্ত বিচার পাবেন না। আর ভারতে জেলের যা মান, সেখানে তাঁর পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। এই যুক্তিতে প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানান তিনি।
আর সেই আবেদন গ্রাহ্য করা হয় মূলত দুটি কারণে। মানবাধিকার রক্ষা সংক্রান্ত ইউরোপিয়ান কনভেনশনের নির্দিষ্ট ধারা আর ব্রিটেনে ২০০৩ সালের প্রত্যার্পণ আইনের ধারার ভিত্তিতে তাঁর আবেদন গ্রহণ করে সে দেশের হাইকোর্ট। সিবিআইযের দায়ের করা মামলায় নীরব মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল পিএনবি-সহ ভারতের একাধিক ব্যাঙ্কে জালিয়াতির পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন নীরব মোদি। একইভাবে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর আত্মীয় মেহুল চোকসিও । এরপর ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ লন্ডনের একটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন নীরব মোদি। তারপর থেকেই তাঁকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে সচেষ্ট হয় ভারত।