হুগলি: হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রুপ সি (Group C) পদের চাকরি খোয়ালেন হগলি জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য টুম্পা মেটে(বাকুলি)।টাকা তো দূরের কথা, এক প্যাকেট মিষ্টিও কাউকে দেননি বলে দাবি টুম্পার। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পেয়েছেন বলে দাবি তাঁর। ২০১৮ সালে টুম্পা চাকরি পান শ্রীরামপুর নেতাজি বয়েজ স্কুলে (Srirampur Netaji Boys School)। পাঁচ বছর হল সেখানে ক্লার্ক হিসাবে চাকরি করছেন।হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে টুম্পা মেটের (Tumpa Mete)।
রিষড়া বামুনারীর বাসিন্দা টুম্পার স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মেটে (Mrityunjoy Mete) তৃণমূল নেতা। বর্তমানে রিষড়া (Rishra) গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। স্ত্রীর চাকরি যাওয়া প্রসঙ্গে মৃত্যুঞ্জয় বলেন, চাকরির প্রয়োজন আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের আছে। কিন্তু স্ত্রীর চাকরির জন্য কাউকে কোনও টাকা দিইনি। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে টুম্পা চাকরি পেয়েছিল। ওএমআর শিটে কিছু হয়ে থাকলে সেটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (Westbengal Board of Secondary Education) বলতে পারবে। আমাদের জানা নেই। আমরা দুজনেই যেহেতু তৃণমূল করি তাই চাকরি চলে যাওয়ায় সামাজিক সম্মান নষ্ট হবে। পাঁচ বছর ওই স্কুলে চাকরি করল তারপর কী করে কী হল আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না। টুম্পা পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল, আমি নিজে ওকে পড়াতাম। এখন বিরোধীরা অপপ্রচার করবেই।
আরও পড়ুন: Shantanu Banerjee | শান্তনু গ্রেফতারের পর মুখ খুলছে জিরাট
টুম্পা মেটে বলেন, ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিই। মিডিয়ার মাধ্যমে দেখছি এই চাকরিতে অনেক টাকা পয়সার লেনদেন হয়েছে। আমি কিন্তু কোনও টাকা লেনদেনে যুক্ত নই। সিবিআই কিংবা ইডি জিজ্ঞাসা করলেও একই কথায় বলব। বিরোধীরা এটা নিয়ে হয়তো আমাকে এবং আমার দলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইবে। কিন্তু মানুষের জন্য সততার সঙ্গে কাজ করেছি। তাই দল পাশে থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। বিজেপির (BJP) শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদক (Mohan Adak) বলেন, যেভাবে গোটা রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি হয়েছে তা তৃণমূল অস্বীকার করতে পারবে না। হাইকোর্ট যে রায় দিচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। টুম্পা মেটে যতই অস্বীকার করুন আদালত বিবেচনা করেই এই রায় দিয়েছে।তৃণমূল আর দুর্নীতি সমার্থক।
উল্লেখ্য, শুক্রবারই শিক্ষা দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হুগলির জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ এবং যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বেশ কিছু দিন ধরেই ইডির সন্দেহের তালিকায় ছিলেন। এর আগে একাধিকবার তাঁকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তলব করে। তাঁর বাড়িতে তল্লাশিও চলে। শুক্রবার টানা সাত ঘণ্টা সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তারও আগে গ্রেফতার হন হুগলিরই আরেক যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। এর মধ্যেই আদালতের নির্দেশে চাকরি গেল হুগলি জেলা পরিষদের সদস্য টুম্পা মেটের।