গান্ধীনগর: গুজরাতের কয়লা কেলেঙ্কারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কাঠগড়ায় তুলল কংগ্রেস৷ অভিযোগ, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কোল ইন্ডিয়ার কয়লা গুজরাত সরকার চড়া দামে অন্য রাজ্যকে বিক্রি করে৷ ওই কয়লা আসলে বরাদ্দ ছিল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য৷ বরাদ্দকৃত কয়লা অন্য সংস্থাকে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করেছে এক শ্রেণির মানুষ৷ গুজরাতের বিভিন্ন সরকারি এজেন্সি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ৷ মোদি জমানার পরেও সমানতালে চলে কয়লা কেলেঙ্কারি৷ ২০০৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চলা সেই কেলেঙ্কারির খবর ফাঁস হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে গুজরাতে৷ মোদি-সহ রাজ্যের চার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস৷ দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত করতে হবে৷ টুইটে খোঁচা মেরে রাহুল গান্ধী লেখেন, ৬০ লক্ষ টন কয়লা গায়েব! প্রধান ‘মিত্র’ মন্ত্রী এব্যাপারে কিছু বলবেন কি?
60 लाख टन कोयला “ग़ायब”!
क्या इस कोयला घोटाले पर प्रधान ‘मित्र’ मंत्री जी कुछ कहेंगे? pic.twitter.com/UhHXIl4bXY
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) February 23, 2022
নরেন্দ্র মোদির ‘না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা’ স্লোগানকে ব্যঙ্গ করে সর্বভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ জানিয়েছেন, গুজরাতে ১৪ বছর ধরে ‘খুব খাউঙ্গা অউর খুব খানে দুঙ্গা’ কর্মসূচি চলছে৷ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য বরাদ্দ কয়লা বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে অন্য রাজ্যে৷ অন্তত ৬ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন এজেন্সি এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত৷’ নরেন্দ্র মোদি, বিজয় রূপানি এবং ভূপেন্দ্র পটেলের বিরুদ্ধেও সরাসরি দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে৷ কংগ্রেস জানিয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাজ্যের শিল্প, খনি ও খনিজ দফতর নিজের হাতে রেখেছিলেন নরেন্দ্র মোদি৷ তারপর ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত বিজয় রূপানি এবং ২০২১ থেকে এখনও পর্যন্ত খনি দফতর রয়েছে ভূপেন্দ্র পটেলের হাতে৷ প্রথম দু’জন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন৷ তৃতীয়জন এখনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷ গৌরব বল্লভের প্রশ্ন, এটা কি কাকতালীয়? দফতরের এত বড় দুর্নীতির খবর তাঁরা জানেন না এটা কি হতে পারে?
২০০৭ সালে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলিতে কয়লার জোগান বাড়াতে এবং কম দামে উন্নত মানের কয়লা সরবরাহ করতে একটি নীতি গ্রহণ করেছিল৷ তাতে ঠিক হয়েছিল, প্রতি টন কয়লা ১৮০০-৩০০০ হাজার টাকায় পাবে ওই সংস্থাগুলি৷ গত ১৪ বছরে ৬০ লাখ টন কয়লা কোল ইন্ডিয়ার কাছ থেকে পেয়েছে গুজরাত৷ অভিযোগ, কোল ইন্ডিয়ার উৎপাদিত সেই কয়লা বাইরের রাজ্যগুলিকে টন পিছু ৮০০০-১০০০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে৷ কংগ্রেসের প্রশ্ন, কেন গত ১০ বছর খনি দফতরকে নিজেদের হাতে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীরা? এরপরই গৌরব বল্লভ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আনন্দীবেন পটেল-সহ গুজরাতের তিন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলেন৷ ইডি, আয়কর দফতর-সহ বিভিন্ন এজেন্সিকে দিয়েও কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত করাতে হবে বলেও দাবি জানান তিনি৷
আরও পড়ুন: Bajrang Dal Activist Murder: বজরং দলের সদস্য খুনে গ্রেফতার ৬, প্রত্যেকেরই অপরাধ রেকর্ড আছে