নয়াদিল্লি: গত সপ্তাহে এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) রায় দিয়েছিল, বিয়ের সরকারি শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও এক হিন্দু যুগল কখনওই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় পায়নি। কারণ বিয়ের ধর্মীয় আচার এবং রীতি পালন করার আগেই তাঁরা হিন্দু বিবাহ আইনে (১৯৫৫) বিয়ে করেছিলেন। ওই যুগল বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, তাদের যেহেতু বিয়েই হয়নি, তাই বিবাহ-বিচ্ছেদের প্রয়োজনই নেই।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে সময় এসেছে বিয়ে সংক্রান্ত ভারতের একাধিক আইন-কানুন এবং তার প্রয়োজনীয়তার প্রতি নজর দেওয়া।
আরও পড়ুন: ভয় পেয়েছেন? আদানি-আম্বানি নিয়ে মোদিকে পাল্টা দিলেন রাহুল
এদেশে দুইরকম বৈবাহিক আইন রয়েছে। একটি হল কিছু ব্যক্তিগত বা ধর্মীয় আইনের (Personal Law) সমষ্টি আর একটি স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্ট (SMA)। হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট (HMA) হল ওই ধর্মীয় আইনের অন্তর্গত। এক্ষেত্রে হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে আনুষ্ঠানিক বিয়েতে সমস্ত আচার পালন করতে হয়। যেমন মালাবদল, সাত পাক ঘোরা ইত্যাদি। এই সমস্ত রীতি পালন করলে তবেই হিন্দু বিবাহ আইনে নথিভুক্ত হয় সেই বিয়ে। ধর্মীয় আচার পালন না করলে হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের শংসাপত্রের কোনও মূল্য নেই।
একই ঘটনা মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রেও। ইসলাম ধর্মে দুই পক্ষের লিখিত সম্মতি প্রয়োজন, তারপর সাক্ষী এবং কাজির উপস্থিতিতে মৌখিক সম্মতি এবং নিকাহনামায় সই করতে হয়। খ্রিস্টান ধর্মের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষে নিজস্ব রীতি মানতে হয়।
কিন্তু স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আচার পালনের প্রয়োজন নেই। ‘কোর্ট ম্যারেজ’ বা ‘রেজিস্টার্ড ম্যারেজ’ হিসেবে পরিচিত এই বিয়ে অ-ধার্মিক এবং সামাজিক যা ধর্ম-নিরপেক্ষ আইনের অন্তর্গত। এক্ষেত্রে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা পালিত হয় আদালতে (বা রেজিস্ট্রারের অফিসে)। ধর্মীয় কোনও আচার ছাড়াই স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের বিয়ে বৈধ। কিন্তু ব্যক্তিগত আইন যেমন হিন্দু বিবাহ আইন বা মুসলিম বিবাহ আইনে আগে ধর্মীয় আচার পালন বাধ্যতামূলক।