কোহিমা: নাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডে (Nagaland Civilian Killings) নিহতদের পরিবারের জন্য বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণের আয়োজন করেছে সরকার। মৃতদের পরিবারপিছু রাজ্য সরকার ৫ লক্ষ এবং কেন্দ্রীয় সরকার ১১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে। কিন্তু স্বজন হারানো মানুষগুলো কী চায়? তা কিন্তু কেউ জানতে চাননি নিহতদের পরিবারের কাছে। টাকা আর তদন্তের (Nagaland Civilian Killings) প্রতিশ্রুতি দিয়েই দায় সেরেছে সরকার!
ওটিঙ গ্রামের ঘরে ঘরে এখন স্বজন হারানোর শোক। শনিবার খনি থেকে কাজ সেরে ফেরার পথে সেনার গুলিতে নিহত হয়েছেন গ্রামেরই ১৩ জন নিরীহ মানুষ। অনেকেই বলছেন, গ্রামে এমন বাড়ি খুঁজে পাওয়া কঠিন, যে বাড়ির কোনও একজন সদস্য প্রাণ হারাননি। পেটের তাগিদে গাড়ি করে কিছু দূর কাজ করতে যাওয়াই যে কাল হবে, তা বুঝতে পারেনি মানুষগুলো।
৩৩ বছর বয়সের ছেলেকে হারানোর দুঃখ তাড়া করে বেড়াচ্ছে চেমওয়াং কোনিয়াককে। কান্না ভেজা গলায় তিনি বললেন, ‘আমরা সরকার পুলিশ বা সেনা বাহিনীকে দোষারোপ করছি না। টাকা দিলেই কিন্তু সবটা চাপা পড়ে যায় না। ঘটনার জন্য যে কমান্ডার দায়ী কিংবা যে মেজরের নেতৃত্বে অপারেশন চলেছিল, তাঁদের অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: Nagaland Civilian Killings: নাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করবে সিট, বললেন শাহ
চেমওয়াংয়ের ছেলে শ্রমিক ভর্তি গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। মৃতের এক আত্মীয় বলেন, ‘মানুষের মৃত্যু বেঁচে থাকার মতোই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু কেউই এইভাবে মরতে চায় না। সেনা বাহিনীর দায়িত্ব আমাদের নিরাপত্তা প্রদান করা। অথচ তারাই আমার ভাইকে গুলি করে নৃশংস ভাবে মারল। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে কতগুলি পরিবার শেষ হয়ে গেল!’
শনিবার খনি থেকে কাজ সেরে একটি পিক-আপ ভ্যানে করে ওটিঙে ফিরছিলেন গ্রামবাসীরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েই সন্ত্রাসবাদীদের ধরতে ওই এলাকায় অভিযানে গিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। জঙ্গি ভেবে গ্রামবাসীদের লক্ষ করেই গুলি চালায় বাহিনী। দীর্ঘক্ষণ কোনও খবর না মেলায় নিহতদের পরিবার পরিজন তাঁদের খুঁজতে বেরোয়। এর পরই দেখা যায়, ট্রাকের উপর পড়ে রয়েছে মৃতদেহগুলি।
আরও পড়ুন: Nagaland : বুঝতে ভুল, নাগাল্যান্ডে জঙ্গি দমন অভিযানে প্রাণ গেল ১৩ গ্রামবাসীর, মৃত জওয়ানও
দুঃখপ্রকাশ করে সেনাবাহিনী বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘এই ঘটনা ও তার জেরে পরবর্তী ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হচ্ছে৷ আইন অনুসারে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’ নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রীও নেইফিউ রিও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। সেনা বাহিনীও পৃথক ভাবে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।