নয়াদিল্লি : কারাবন্দির সাজা হ্রাসে বিলকিস বানো মামলা দেশে এক দৃষ্টান্ত তৈরি করল। বিলকিস বানো মামলার রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ সাজা হ্রাসের গাইডলাইনও নির্দেশ করেছে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আগামিদিনে তা অনুসৃত হতে চলেছে।
দেখা যাক, শীর্ষ আদালতের গাইডলাইনগুলি কী কী।
১. যে রাজ্যে সাজা হয়েছিল, সেই সরকারের কাছেই সাজা কমানোর আবেদন করতে হবে। অপরাধ যেখানে হয়েছে বা যেখানে সে বন্দি, সেখানে নয়।
২. বন্দি নিজে বা তার ঘোষিত প্রতিনিধি আবেদন করতে পারবে। চোদ্দ বছর সাজা খাটার পরেই যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি আবেদন করতে পারবে।
৩. যে বিচারক/আদালত সাজা দিয়েছিল, সাজা কমানোর ক্ষেত্রে তার অভিমত নিতে হবে। সেই অভিমতে স্পষ্টভাবে কারণ দেখাতে হবে।
৪. সাজা ঘোষিত হয় যে রাজ্য থেকে, সেই সরকারের সাজা কমানোর নীতি অনুসরণ করতে হবে।
৫. সাজা হ্রাসের সিদ্ধান্তে বৈষম্য থাকা চলবে না। দেখতে হবে, ক) সমাজে সেই অপরাধের প্রতিক্রিয়া কেমন। খ) বন্দি ফের একই অপরাধ করতে পারে কি না। গ) অপরাধ করার ক্ষমতা বন্দির অবশিষ্ট আছে কি না। ঘ) তার পরিবারের সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন, পথ দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ উদ্যোগ পরিবহণ দফতরের
৬. আবেদনপত্র বিবেচনার অধিকারী জেল অ্যাডভাইসারি কমিটিতে ডিস্ট্রিক্ট জজকে রাখা যাবে না।
৭. আবেদন বাতিল হলে, তার কারণ নির্দিষ্টভাবে লিখতে হবে।
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময়কালে গণধর্ষণের শিকার হন বিলকিস বানো। তাঁর চোখের সামনেই ৩ বছরের কন্যা সহ পরিবারের ৭ সদস্যকে কুপিয়ে খুন করা হয়। সেই সময় ৫ মাসের গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই কোর্ট অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে বম্বে হাইকোর্টও সেই রায় বহাল রাখে। ২০২২ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন গুজরাত সরকার অভিযুক্তদের মুক্তি দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিলকিস বানো গুজরাত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। এই মামলার রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ সাজা হ্রাসের গাইডলাইন নির্দেশ করে।
আরও অন্য খবর দেখুন