নয়াদিল্লি: শেষ দেখে ছাড়ার হুমকি দিলেন সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শুক্রবার লোকসভায় ধ্বনিভোটে তাঁর বহিষ্কারের সুপারিশ পাশ হওয়ার পর সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে মহুয়া ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। আগামিদিনে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে বিজেপির বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলবে। তাঁর আশঙ্কা, আগামিকাল থেকেই হয়ত বাড়িতে সিবিআই, ইডির অভিযান শুরু হয়ে যাবে। আগামী ছয় মাস হেনস্থার শিকার হতে হবে। তিনি বলেন, আমি তার জন্য তৈরি।
এদিন যখন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে দাঁড়িয়ে মহুয়া সাংবাদিক বৈঠক করেন, তখন তাঁর পাশে ইন্ডিয়া জোটের তাবড় শরিকদলের নেতারা হাজির। কে নেই সেখানে? কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরী, ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রবীণ নেতা ফারুক আবদুল্লা-সহ অনেকেই। তৃণমূলের প্রায় সব সাংসদই ছিলেন তাঁর পাশে।
মহুয়া বলেন, লোকসভার এথিক্স কমিটিতে এথিক্স বলে কিছু নেই। তারা সব নিয়মকানুন ভেঙে ফেলেছে। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি কিংবা কোনও উপহার নিয়েছি, তার কোনও প্রমাণ কেউ দেখাতে পারেনি। ক্ষুব্ধ প্রাক্তন সাংসদ বলেন, মোদি সরকার যদি ভাবে আমাকে চুপ করিয়ে আদানি ইস্যু থেকে তারা ছাড় পেয়ে যাবে, তবে তারা ভুল ভাবছে।
আরও পড়ুন: খুনের অভিযোগ, অথচ এফআইআর হয়নি, বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট
এদিন লোকসভায় এথিক্স কমিটির সুপারিশসম্বলিত রিপোর্ট স্পিকার ওম বিড়লার কাছে পেশ করা হয়। সেই রিপোর্টে প্রশ্ন-ঘুষ কাণ্ডে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করা হয়। গত সোমবারই সেই রিপোর্ট লোকসভায় পেশ করার কথা ছিল। তা পেশ করা হল এদিন। মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ কিংবা লোকসভা থেকে বহিষ্কার যে শুধুই সময়ের অপেক্ষা, তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। লোকসভার তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগে স্পিকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে বলেছিলেন, আমরা মহুয়াকে বহিষ্কার করা হবে বলে আশঙ্কা করছি। তবে লোকসভায় তাঁকে বলতে দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
এদিনও সেই দাবিতেই লোকসভায় সরব হন সুদীপ ছাড়াও তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু স্পিকার সেই দাবি খারিজ করে দেন। মহুয়ার পক্ষে এদিন দারুণ সওয়াল করেন কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী, অপর প্রবীণ কংগ্রেস সদস্য মণীশ তিওয়ারি। বিজেপি সদস্যরা বলেন, মহুয়া মৈত্র সংসদের মর্যাদাহানি করেছেন। তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে।